• জেলের সহবন্দিদের সঙ্গে প্ল্যান, রেকি করেই ডাকাতি কাটোয়ায়
    এই সময় | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, কাটোয়া: পুইনি গ্রামে এক জ্যোতিষীর বাড়িতে দুঃসাহসিক ডাকাতির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার কিনারা করল কাটোয়া থানার পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় হীরামোহন মল্লিক ওরফে হীরু এবং আমজাদ আলি শেখ ওরফে লম্বু নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হীরুর বাড়ি বর্ধমান শহরের কেষ্টপুর এলাকায়। লম্বু মঙ্গলকোট থানার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানতে পেরেছে, ডাকাতির আগে ওই বাড়ি রেকি করে গিয়েছিল ধৃতরা। জেলে আলাপ হওয়া অন্য দুষ্কৃতীদের দলে নিয়ে তারা ডাকাতি করেছিল।

    শুক্রবার পুইনি গ্রামে পেশায় জ্যোতিষী নিবাস দাসের বাড়িতে চড়াও হয় ডাকাতদল। নিবাস তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন তাঁর ছেলে রাকেশ দাস ও দুই বৃদ্ধা। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ রাকেশ খাওয়া–দাওয়ার পর বাড়ির পোষ্যকে শৌচকর্ম করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন।

    তখনই ছয়–সাত জনের সশস্ত্র দুষ্কৃতীদল রাকেশকে আটকায়। ভোজালি দিয়ে আঘাত করে এবং এক রাউন্ড গুলিও চালায়। তবে গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে প্রাণে বাঁচেন রাকেশ। তাঁকে ঠেলতে ঠেলতে ঘরে নিয়ে আসে দুষ্কৃতীরা। রাকেশ ও তাঁর দুই দিদিমার গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ঘরের আলমারিগুলো খুলে যাবতীয় গয়না ও নগদ ৫০-৬০ হাজার টাকা লুট করে। ঘর সংলগ্ন পারিবারিক কৃষ্ণকালী মন্দিরের তালা খুলেও দেবদেবীর গয়না নেয় তারা। সব মিলিয়ে প্রায় ছয়–সাত ভরি সোনা এবং ২০-৩০ ভরি রুপোর গয়না ও নগদ টাকা লুট করে পালায় দুষ্কৃতীদল।

    প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কোনও গ্যাং নয়, বিভিন্ন এলাকার দুষ্কৃতীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে পুইনি গ্রামে ডাকাতি করেছে। দুষ্কৃতীরা একে–অপরের পরিচিত হয় জেলে বসে। ঘটনার দিন ওই এলাকায় দুষ্কৃতীরা একসঙ্গে আসেন। কেউ বাসে, কেউ টোটোয় এসে তারা জড়ো হয় মালডাঙা বা চন্দ্রপুর বাজার এলাকায়। রাতে সকলে নিবাসের বাড়ির কাছে আসে। আগে থেকে তারা ডাকাতির জায়গা রেকি করেছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

    সূত্র মারফত পুলিশ খবর পায়, শুক্রবার পুইনি থেকে কিছুটা দূরে মন্তেশ্বর থানার মালডাঙা বাজার এলাকায় এক দুষ্কৃতীকে কয়েকজনের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। বিভিন্ন ভাবে খোঁজ খবর চালিয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন, এই ডাকাতদলে মঙ্গলকোটের লম্বু শেখ এবং বর্ধমানের হীরু শেখ ছিল।

    এর পরেই পুলিশের একটি দল বর্ধমান শহরে গিয়ে হীরুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ডাকাতির ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় মঙ্গলকোটের নিগন বাজার থেকে ধরা হয় লম্বুকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক গুরুতর অভিযোগের মামলা রয়েছে হীরু–লম্বুর বিরুদ্ধে। এর আগে একাধিক বার জেল খেটেছে দু’জনে।

    রবিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃত দু’জনকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, খোয়া যাওয়া সামগ্রী উদ্ধারের জন্য তদন্ত চলছে।

  • Link to this news (এই সময়)