জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: জঙ্গি অনুপ্রবেশের আতঙ্ক তাড়া করছে সীমান্ত লাগোয়া বনগাঁয়। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরাও ধরা পড়ছেন বনগাঁ-বাগদার একাধিক এলাকা থেকে। বনগাঁয় বেশ কিছু যুবক ঘাঁটি গেড়েছেন! শাল ব্যবসার আড়ালে তাঁরা এলাকায় ঢুকেছেন? তাঁদের সন্ধান, খোঁজখবর পেতে বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ এবার উদ্যোগী হলেন। তিনি নিজে এই বিষয়ে বনগাঁ থানার পুলিশকে চিঠি দিলেন। শনিবার রাতেই জাল পাসপোর্ট চক্রের অন্যতম অভিযুক্ত মনোজ গুপ্তকে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের জাল বনগাঁয় ছড়িয়ে আছে। সেই সন্দেহ করেছেন পুলিশ ও গোয়েন্দারা। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থেকে জঙ্গি সন্দেহে পুলিশ কয়েকজনকে পাকড়াও করেছে। হেমনগর উপকূল থানার পুলিশও কয়েকজন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা পুলিশের কাছে ফেরিওয়ালা বলে নিজেদের পরিচয় দিয়েছিলেন। ফেরিওয়ালার ছদ্মবেশে জঙ্গিরা ঢুকে পড়তে পারে। এবার এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। তিনি বনগাঁ থানায় বিষয়টি নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বনগাঁ শহরে কাশ্মীর থেকে আসা ফেরিওয়ালাদের সংখ্যা বাড়ছে। কাশ্মীর থেকে আশা ওই যুবকরা শাল ও শীতের পোশাকের দোকান খুলেছেন। যত দোকান তাঁরা করছেন, শীতের পোশাকের তত ক্রেতা বনগাঁয় নেই।” তিনি আরও লিখেছেন, “শীতের পোশাক বিক্রি করতে কারা আসছেন, তাঁদের কোনও তথ্য পুরসভার কাছে নেই। সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য তাঁদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া প্রয়োজন। বনগাঁ শহরে আসা ফেরিওয়ালা ওই যুবকদের সম্পর্কে তদন্ত করা হোক।” বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বনগাঁর পুরপ্রধানও। তিনি এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিয়েও যথেষ্ঠ উদ্বিগ্ন। এই এলাকা সীমান্তের ঢিল ছোড়া দূরত্বে। বাইরে থেকে শাল বিক্রির আড়ালে জঙ্গিরা সেখানেও ঘাঁটি গাড়তে পারে। কারা শাল ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় ঢুকছেন? পুরসভার কাছে পরিচয়পত্রও জমা দেওয়া হয়নি। সেই বিষয়ে তদন্ত করা হোক। এই কথা বলছেন পুরপ্রধান গোপাল শেঠ। প্রসঙ্গত, প্রতি বছর কাশ্মীর থেকে বহু শাল ব্যবসায়ী রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আসেন। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তাঁরা শাল ও শীতবস্ত্র বিক্রি করেন। গরম পড়লে তাঁরা আবার ফিরেও যান। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অন্যরকম। সে কারণেই আগাম সতর্কতা। এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল।