দীর্ঘ কয়েকদিন ‘বাঘ-বন্দি’ পর্বের পর রবিবার অবশেষে বাগে এসেছে বাঘিনি জ়িনাত। ঝাড়খণ্ড সীমানা পেরিয়ে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার জঙ্গল রীতিমতো চষে বেড়িয়েছিল সে। জ়িনাতকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল বন দপ্তরের কর্মীদের। অবশেষে রবিবার বিকেল ৪টে ০৯ মিনিটে ঘুম পাড়ানো যায় জ়িনাতকে। একাধিকবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে একটু একটু করে জিনাতকে কাবু করা হয়েছে। তবে বাংলার জঙ্গলের খ্যাতনামা ‘বন্দুকবাজ’ মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস নিজেই জানিয়েছেন জ়িনাতকে ধরা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। এই অভিজ্ঞতা তাঁর আগে হয়নি। মৃত্যুঞ্জয়ের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলিতেই কাবু হয়েছে ‘শেরনি’।
বাঘ ধরতে এ বারও ডাক পড়েছিল সুন্দরবনের ডেপুটি রেঞ্জার মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসের। অকুতোভয় ‘বন্দুকবাজ’ মৃত্যুঞ্জয়ের নাম বন দপ্তরে কারও অজানা নয়। এ বারও ঝাড়গ্রামে বাঘ ঢোকার দিনেই তিনিও ঘাঁটি গাড়েন জঙ্গমহলে। সংবাদ মাধ্যমে রবিবার তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে সুন্দরবনে বাঘকে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়েছি। কিন্তু বারবার ঘুমপাড়ানি ডার্ট বাঘ নিজেই সরিয়ে দিয়েছে—এই ধরনের অভিজ্ঞতা আমার আগে হয়নি। সে জন্যই এই কাজ অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং ছিল। ’ তিনি জানান, রবিবার ৪টের পর বাঘটিকে কাবু করার পরেও সে হালকা নড়াচড়া করছিল। তাই আবার তাকে হালকা একটা ঘুমপাড়ানির ডোজ় দিতে হয়।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত থেকে রবিবার বিকাল অবধি তিন থেকে চার বার বাঘিনিকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছিল ঘুমপাড়ানি গুলি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমপাড়ানির ডোজ় দেওয়া হয়েছিল বাঘিনিকে। যাবতীয় নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করা হয়েছিল, জানায় বন দপ্তর। নাইলনের নেট দিয়ে বাঘের চলাফেরার জায়গা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। সুন্দরবনেও কোনও বাঘকে বন্দি করতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। জ়িনাতের ক্ষেত্রেও একই পন্থা নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ওডিশার সিমলিপালের ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়িতে ঢোকে জ়িনাত। রবিবার সে পৌঁছয় পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে। তারপর জঙ্গলের রাস্তা ধরে বাঁকুড়ায় ঢুকেছিল সে। সুস্থ অবস্থায় জ়িনাতকে বাগে আনতে পেরে খুশি বন দপ্তরের কর্মীরা।