একই দড়িতে ঝুলছেন মা ও তাঁর তিন বছরের কন্যা সন্তান। ছোট্ট দুই হাত দড়ি দিয়ে বাঁধা। ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। সোমবার সকালে বর্ধমান শহরের বাদশাহি রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নিজের কন্যাসন্তানকে মেরে আত্মঘাতী হয়েছেন মা। কিন্তু কী কারণে এই ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনা খতিয়ে দেখছে বর্ধমান থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রভাঞ্জন বর্মন তাঁর স্ত্রী মামনি সাউ বর্মন ও মেয়ে প্রজ্ঞা বর্মনকে নিয়ে বর্ধমানের বাদশাহি রোড এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। প্রভাঞ্জন রেলকর্মী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় বাড়ি তাঁদের। রবিবার নাইট ডিউটি ছিল তাঁর। কাজে বেরিয়ে যান। সোমবার সকাল থেকে স্ত্রীকে ফোনে পাননি। সুইচড অফ বলছিল। বাড়ি এসে দরজা ধাক্কা দিলেও কোনও সাড়া শব্দ পাননি। এর পরই বাড়ির মালিককে ডাকতে থাকেন।
বাড়ির মালিক তপনকুমার ভট্টাচার্য জানান, রবিবার একটি কাজে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পর বাচ্চাটির সঙ্গে কথাও হয়। ও তখন কার্টুন দেখছিল। এর পর তিনি নিজের ঘরে চলে যান। এ দিকে সোমবার সকালে প্রভাঞ্জন তাঁকে জানান, স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
এর পরই জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখেন মামনি ও প্রজ্ঞা ঝুলছে। তপনকুমার ভট্টাচার্যের কথায়, ‘২০২২-এর সেপ্টেম্বরে ওরা এখানে ভাড়া এসেছে। দু’বছর হয়ে গেল কোনওরকম অশান্তি তো দেখিনি। আজ সকালে হঠাৎ ওর বর বলছেন, ‘কাকু ওকে ফোনে পাচ্ছি না। ফোন বন্ধ বলছে। ডেকেও সাড়া পাচ্ছি না’। নেমে এসে দেখি দরজা বন্ধ। পরে লাঠি দিয়ে জানলা ধাক্কা দিয়ে খুলি। ততক্ষণে পাড়ার লোকেরাও এসে গিয়েছে। পুলিশকেও জানানো হয়। দেখি মা আর মেয়ে একই দড়িতে ফ্যান থেকে সঙ্গে ঝুলছে।’
কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।