জঙ্গি সন্দেহে আগেই কেরল থেকে মহম্মদ শাদ রাডি ওরফে শাব শেখকে গ্রেপ্তার করেছিল অসম এসটিএফ। এ বার গ্রেপ্তার তার পিসতুতো ভাই সাজিবুল ইসলাম। জানা গিয়েছে, বাংলা এসটিএফের সঙ্গে অসম পুলিশের এসটিএফ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে নওদার দুর্লভপুরের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে বাংলায় ক্যানিং থেকে জাভেদ মুন্সিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার করা হয় শাব শেখকেও। জানা যায়, সন্দেহভাজন আনসারুল্লা বাংলা টিম বা এবিটি জঙ্গি সন্দেহভাজন শাব মুর্শিদাবাদের ভোটারও। এ বার সেই নওদা থেকে গ্রেপ্তার তার এক আত্মীয় সাজিবুল।
শাব শেখের পিসতুতো ভাইকে রবিবার রাতে নওদার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। শাব শেখ বাংলাদেশ থেকে এসে সাজিবুলদের বাড়িতেই উঠেছিল। সূত্রের খবর, গাজি রহমান বলে রবিবার একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় অসম থেকে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, অস্ত্র, বিস্ফোরক মজুতের মূল কারিগর এই গাজি। অসমের কোকরাঝাড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করেই উঠে আসে সাজিবুলের নাম। তার পরই তাকে রবিবার গভীর রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর।
সাজিবুল ইসলামের আত্মীয়দের দাবি, রবিবার রাত আড়াইটে নাগাদ বাড়ি থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় সাজিবুলকে। চাষাবাদ করত সে। বছর দেড়েক আগে সৌদিতে কাজে গিয়েছিল। তবে রবিবার কী কারণে বাড়িতে গোয়েন্দার অভিযান, কেনই বা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল, কিছুই জানে না তারা।
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার ভারত উপমহাদেশীয় শাখা আনসারুল্লা বাংলা টিম বা এবিটি। গোপন সূত্রে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, ভারতে নাশকতার ছক কষছে এবিটি। তাদের দমনে অসম এসটিএফ ‘অপারেশন প্রঘাত’ শুরু করে। এখনও অবধি ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই অভিযানে।
এর মধ্যে বাংলা থেকেও গ্রেপ্তারি একাধিক। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের এসটিএফ এবং অসম পুলিশের যৌথ অভিযানে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মিনারুল শেখ এবং মহম্মদ আব্বাসকে। তারা এবিটি-এর সদস্য বলে জানতে পারে গোয়েন্দারা। তারপর থেকেই রাজ্য জুড়ে চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়। অন্যদিকে মিনারুল ও আব্বাসকে জেরায় উঠে আসে শাব শেখের নাম। এ বার তার পিসতুতো ভাই জালে। অন্যদিকে মুস্তাকিন মণ্ডল নামেও এক জনকে নওদা থেকে আটক করা হয় বলে খবর।
জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার সন্দেহে বাংলা থেকে একাধিক গ্রেপ্তারি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। বিরোধীরা জানতে চাইছে, বাংলা কি জঙ্গি কার্যকলাপের ‘সেফ করিডর’? রবিবারই রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা, এডিজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিমও।
বাংলাদেশি জঙ্গির ধরা পড়া নিয়ে সাধারণের উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেন তাঁরা। রাজীব কুমার বলেন, ‘ওপার বাংলার অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগ কেউ বাংলাতে কাজে লাগাতে পারবে না। যারা সমস্যা তৈরির চেষ্টা করবে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করব। আমরা আমাদের কাজ করছি নিঃশব্দে। ভরসা রাখুন।’