• আইনি জয়ে ১৪ বছরের বেতন পাওয়ার আশা ‘সংগঠক’ শিক্ষকদের
    আনন্দবাজার | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • প্রায় দু’দশক আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরে অবশেষে সুফল মিলল। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ‘হরিণখোলা ধ্রুব অধীশ্বর হাই স্কুলের’ ‘সংগঠক’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য বেতন পেতে চলেছেন।

    সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে হাই কোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২০১১ সাল থেকে অনুমোদন দিয়ে ন্যায্য বেতন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকার সেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে গেলে কয়েক দফায় শুনানির পরে আবেদন খারিজ হয়। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, হাই স্কুলের অনুমোদনের দিন থেকে, অর্থাৎ, ২০১১ সাল থেকে আবেদনকারী শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের স্বীকৃতি দিয়ে তিন মাসের মধ্যে প্রাপ্য বেতন ও বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।

    ওই স্কুলের শিক্ষক মৃণালকান্তি কামার-সহ এক দল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী হাই স্কুলের অনুমোদনের আবেদন করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি ও কে এম হোসেন জানান, আবেদনকারীরা ১৯৮৬ সাল থেকে ‘সংগঠক’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী হিসাবে কর্মরত। তাঁরাই উক্ত স্কুলকে হাই স্কুলে উত্তীর্ণ করার অনুমোদন দেওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু শিক্ষা দফতর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিভিন্ন যুক্তিতে আটকে যায় অনুমোদন। অবশেষে হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১১ সালে হাই স্কুলের অনুমোদন দেয় রাজ্যের শিক্ষা দফতর। কিন্তু শর্ত দেয়, স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করতে হবে। এর ফলে এত বছর ধরে কাজ করা ‘সংগঠক’ কর্মীরা ন্যায্য বেতন থেকে বঞ্চিত হন। তাঁদেরও অনুমোদন দেওয়া হোক, এই আবেদন করে আদালতে যান তাঁরা। মামলা হয় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিচারপতি আবেদনকারীদের বঞ্চিত না করে ২০১১ সাল থেকে প্রাপ্য বেতন মেটানোর পক্ষে রায় দেন।

    রাজ্য ওই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। রাজ্যের যুক্তি, স্কুলের অনুমোদনের সময়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে শর্ত থাকায় তাঁদের অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়। আইনজীবী এক্রামুল বারির দাবি, ‘সংগঠক’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস আইন প্রযোজ্য নয়। বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পূর্বের একক বেঞ্চের রায় বহাল রেখে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেন। এর ফলে ১৯৮৬ থেকে কর্মরত ‘সংগঠক’ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা হাই স্কুলের অনুমোদনের সময়কাল থেকে প্রাপ্য বেতন-সহ বকেয়া পাওয়ার আশা করছেন। তাঁদের কয়েক জন ইতিমধ্যেই অবসর নিয়েছেন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)