• সন্দেশখালিতে দরাজহস্ত মুখ্যমন্ত্রী, উদ্বোধন করলেন একগুচ্ছ প্রকল্প
    বর্তমান | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • শ্যামলেন্দু গোস্বামী, সন্দেশখালি: লোকসভা ভোটের আগে কথা দিয়েছিলেন সন্দেশখালি আসবেন। কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু এলেন তাই নয়, দেখলেন এবং জয় করলেন দ্বীপাঞ্চলের মানুষের মন। সোমবার দুপুরে সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশনের মাঠ সাক্ষী থাকল জননেত্রীর উপস্থিতিতে জনতার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের। উন্নয়নের একগুচ্ছ ‘উপহার’ তুলে দিলেন মানুষের জন্য। সেই সঙ্গে আগামী দিনে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কিছু ঘোষণাও করলেন তিনি। তাঁর এই ঘোষণার পর গোটা সভাস্থল মুখরিত হয়ে উঠল সমর্থন সূচক চিৎকার আর হাততালিতে। ভেসে এল শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি। মমতাও কুর্নিশ জানালেন মানুষের আবেগের এই বিস্ফোরণকে। 

    সভামঞ্চ থেকেই সরকারি পরিষেবা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। কেউ সকাল সকাল রান্না করে, কেউ খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে চলে আসেন মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে। আকাশে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার চক্কর কাটতেই উৎসাহী মহিলারা গলা ফাটাতে শুরু করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নামে ওঠে জয়গান। মঞ্চের সামনে থাকা ৮ থেকে ৮০র ভিড় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানায় সোচ্চারে। আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালির মহিলাদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায় ভরিয়ে দেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বসিরহাট মহকুমার মোট ৬৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তালিকায় ছিল একাধিক রাস্তা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়ন থেকে পানীয় জলের বন্দোবস্ত। এর জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে ১১২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। পাশাপাশি ১০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচে রূপায়িত হবে, এমন ৪২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি। সন্দেশখালিতে একটি ৩০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল আছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই হাসপাতালকে ৬০ শয্যার করার কথা ঘোষণা করেছেন। হাসপাতালে সিজার, অপারেশন সহ জরুরি সমস্ত পরিষেবা যাতে সঠিকভাবে দেওয়া যায়, তার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। সন্দেশখালিতে আগামী দিনে মিষ্টি সন্দেশের ক্লাস্টার তৈরি করা যেতে পারে বলে জানান তিনি। এদিন পড়ুয়াদেরও উৎসাহিত করে মমতার পরামর্শ, ‘ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। আমি দেখতে চাই, এই সন্দেশখালি থেকেই মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকে কেউ র‍্যাঙ্ক করবে। আইএএস, আইপিএস, পাইলট বা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয়ে এলাকার নাম উজ্জ্বল করবে। তোমরাই বাড়াবে সন্দেশখালির সম্মান। তাই তোমাদের এত আমি ভালোবাসি।’ অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে মমতা বলেছেন, ‘পড়াশোনার খরচ নিয়ে কোনও চিন্তা নেই, সরকার পাশে রয়েছে। আমরা যা বলি, সেটা করে দেখাই। ভাঁওতা দিই না।’ এলাকার মহিলাদের প্রতি তাঁর সাবধান বাণী, ‘দুষ্টু লোকেদের খপ্পরে পড়বেন না। হঠাৎ করে কেউ ডাকলে চলেও যাবেন না। ভোটের আগে মোটা টাকার খেলা হয়েছে। মানুষের সম্মান নষ্ট করেছে। …আমি আপনাদের পাহারাদার হয়েই থাকব।’ সন্দেশখালির নামে জয়ধ্বনি দিয়ে টানা এক ঘণ্টার বক্তৃতা শেষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
  • Link to this news (বর্তমান)