নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: সন্দেশখালিতে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হল সোমবার। তার আগের রাতেই বিজেপির ঘরে কাঁপন ধরাল তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে যে সন্দেশখালি আন্দোলন সাড়া ফেলেছিল, তার অন্যতম মুখ সুজয় মণ্ডল যোগ দিলেন তৃণমূলে। তাঁর হাতে জোড়াফুলের পতাকা তুলে দেন সন্দেশখালি ২ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতি দিলীপ মল্লিক সহ অন্যান্যরা। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, যত দিন যাচ্ছে, সন্দেশখালির মাটিতে বিজেপির রাশ আলগা হচ্ছে। এই ঘটনা তার একটি জলজ্যন্ত প্রমাণ।
সুজয় মণ্ডল এলাকায় সুজয় মাস্টার নামেই বেশি পরিচিত। নারী নির্যাতন, জমি দখল ইত্যাদি অভিযোগকে কেন্দ্র করে লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালিতে যে আন্দোলন দানা বেঁধেছিল, অনেকে মনে করেন, সেই পর্বের সলতে পাকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই সুজয় মাস্টারের। আন্দোলনের সূত্র ধরে ভোটব্যাঙ্ক ভরানোর আশায় সন্দেশখালি আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে বসিরহাট লোকসভা আসনে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু ভোটে বিপর্যস্ত হয় গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলের মতে, ভোটে হারার পর থেকে বিজেপি এই এলাকায় আর হালে পানি পায়নি। সংগঠন একেবারে তলানিতে। রেখাদেবীকেও আর সেভাবে এলাকায় দেখা যায় না। সন্দেশখালি আন্দোলনের বিজেপি নেত্রী সিরিয়া পারভিন লোকসভা ভোটের আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পরের চমক এল রবিবার রাতে। সুজয় মাস্টার যোগ দিলেন তৃণমূলে। যেভাবে একে একে বিজেপির নেতা-নেত্রীরা শাসক দলে ভিড়ছেন, তাতে সন্দেশখালি নিয়ে আরও অনেক গোপন রহস্য প্রকাশ্যে আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজয় মাস্টারকে আন্দোলনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলা চলে। শিক্ষক হিসেবে এলাকায় তাঁর যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তাই তাঁর কথা বিশ্বাস করে মানুষ। আন্দোলন গতি পায়। তাঁকে রেখা পাত্রের রাজনৈতিক ‘গুরু’ বলেও মনে করেন অনেকে। এই আবহে সুজয়বাবুর তৃণমূলে যোগদান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সুজয়বাবু বলেন, ‘আমাদের প্রতিবাদ ছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। তাই পথে নেমেছিলাম। তবে রেখা পাত্রের রাজনৈতিক গুরু আমি নই।’ সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাত বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে শামিল হয়েছেন উনি। ওঁর ভুল ভেঙে গিয়েছে। উনি রেখা পাত্রর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন। আগামী দিনে আরও চমক থাকছে, অপেক্ষা করতে হবে।’ তবে বিজেপির দাবি, আন্দোলনের কোনও মাথা ছিল বললে ভুল হবে। মানুষ নিজেদের দাবি নিয়ে পথে নেমেছিল।