• বর্ষশেষে উপহারের ঝুলি উপুড় করলেন মুখ্যমন্ত্রী
    এই সময় | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • তপন মণ্ডল ■ সন্দেশখালি

    বর্ষশেষে সন্দেশখালি আসার ঘোষণায় চমক ছিল। সোমবার সন্দেশখালিতে এসে সেখানকার মানুষের জন্য উপহারের ডালি উপুড় করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সন্দেশখালির ঋষি অরবিন্দ মিশন মাঠে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা থেকে এলাকার উন্নয়নে একগুচ্ছ ঘোষণা করেন মমতা।

    তার মধ্যে অন্যতম, ঝুপখালিতে বেড়মজুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের মধ্যে ধুলিয়া খালের উপর ধুলিয়া–ঝুপখালিতে নতুন সংযোগকারী সেতু তৈরি। বছরের গোড়ায় এই বেড়মজুরেই আগুন জ্বলেছিল বিক্ষোভের। তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্থানীয় মহিলারা। আর এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় উলুধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানালেন এলাকার মহিলারাই। সভায় ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মতো।

    শেখ শাহজাহান কাণ্ডে সন্দেশখালির পর সব থেকে বেশি বেড়মজুর এলাকা উত্তপ্ত হয়েছিল। তৃণমূল নেতা ও তার অনুগামীদের জোর করে জমি দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নেতাদের মেছোভেড়ির আলাঘরে আগুন লাগিয়েছিল গ্রামবাসীরা। গ্রেপ্তার হন কয়েকজন তৃণমূল নেতা। এমনকী শেখ শাহজাহানের ভাইয়ের বিরুদ্ধেও এলাকার মানুষ সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এখনও অধরা শেখ শাহজাহানের মেজো ভাই শেখ সিরাজ। এ দিন সেই বেড়মজুরে মুখ্যমন্ত্রীর খালের উপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা করেন।

    এ দিন সভায় উপস্থিত সন্দেশখালির মানুষ ব্যানার হাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান, সন্দেশখালির জেলিয়াখালিতে বিদ্যাধরী নদীর উপর একটি সেতু তৈরির। উপস্থিত দর্শকদের দাবি শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটা দিয়েছি। এটাও আমরা নজরে রাখব। একবারে সব হয় না। টাকাটা জোগাড় করতে হয় তো। আসলে বাংলা হচ্ছে নদী মাতৃক দেশ। সব জায়গায় সবাই চায় একটা করে ব্রিজ হোক। কিন্তু সেই টাকাটা জোগাড় করতে হয়। জেটিঘাট বাড়ানো হচ্ছে, লঞ্চ বাড়ানো হচ্ছে।’

    ইংরাজি বর্ষ শেষে সোমবার দুপুর একটায় মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার সন্দেশখালির মাটি স্পর্শ করে। প্রশাসনিক সভার শুরুতে বাংলার বাড়ি, দুঃস্থ মহিলার গৃহ প্রকল্প, স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী, ই–রিকশা নিবন্ধীকরণ ইত্যাদি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেন উপভোক্তাদের হাতে। সন্দেশখালির প্রায় ২০ হাজার মানুষ এ দিন রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা পান।

    এ দিন সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ৬৬টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া ৪২টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী, যার অর্থমূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা। সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে ৩০ বেডের একটি রুরাল হাসপাতাল আছে। আমি এটি ৬০ বেডের করে দিতে বলেছি। গর্ভবতীদের চিকিৎসার জন্য সিজারের ব্যবস্থা থাকবে। অপারেশন থিয়েটার–সহ সব কিছুই থাকবে।’

  • Link to this news (এই সময়)