মুখ্যমন্ত্রীর ‘উপহার’ নষ্ট হচ্ছে, পথ অবরোধ গ্রামবাসীদের
আজকাল | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর ব্লকের রাজধরপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেশ কিছু গ্রামের মানুষ নিজেদের এলাকায় প্রথম পাকা রাস্তার মুখ দেখতে পেয়েছিলেন। ওই পঞ্চায়েতের নগরাজোল থেকে শীলপুকুর পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে।
কিন্তু বেআইনিভাবে রাজধরপাড়া পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সরকারি খাস জমি এবং ব্যক্তিগত জমি থেকে মাটি কেটে তা পাচার হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। মাটি বহনকারী ওভারলোডেড ট্রাক্টরের চলাচলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নব নির্মিত পাকা রাস্তা।
এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সকালে মাঠপাড়া এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। আটকে দেওয়া হয় মাটি বোঝাই কয়েকটি ট্রাক্টর। তবে বেআইনিভাবে মাটি কাটার কাজের সঙ্গে যুক্ত মাটি মাফিয়া এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজধরপাড়া অঞ্চলের বোয়ালিয়াডাঙ্গা ফুটবল মাঠের কাছে সম্প্রতি কয়েকটি তিন ফসলি জমি থেকে গভীর করে মাটি কেটে নেয় মাফিয়ারা। এরপর এখন বকুলতলা মাঠের কাছে সরকারি খাস জমি এবং তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার কাজ চলছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে একাধিকবার জানিয়েও মাটি কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
গ্রামবাসীরা বলেন, মাটি মাফিয়ারা জেসিবি মেশিন ব্যবহার করে গভীর করে তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন। এরপর ১৫–২০ টি ট্রাক্টর সেই মাটি ভর্তি হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে কাটাবাগান, গজধরপাড়া, নওদাপানুর হরিহরপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকার ইটভাটাগুলোয়।
তবে গ্রামের নবনির্মিত রাস্তা ভেঙে যেতে শুরু করায় বছরের শেষ দিনে সরব হলেন গ্রামবাসীরা। এদিন সকালে ফের ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হলে তারা ওভারলোডেড গাড়িগুলো আটকে দেন। মঙ্গলবার গ্রামবাসীরা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে এলাকা থেকে বেআইনিভাবে মাটি কাটা এবং তার পরিবহন বন্ধের গোটা বিষয়টি জেলাশাসক, বিএলআরও, বিডিও সহ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও জানাবেন বলে জানান।
পঞ্চায়েত প্রধান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বেআইনিভাবে মাটি কাটা বন্ধ বা ওভারলোডিং বন্ধ করার দায়িত্ব আমার নয়। প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।’ অন্যদিকে তৃণমূল পরিচালিত বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আইজুদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘সরকারের অনুমতি না নিয়ে এবং রয়্যালটি না দিয়ে কেউ যদি মাটি কেটে থাকে তাহলে সে অন্যায় করছে। জনগণের ক্ষতি হোক এমন কোনও কাজ আমি চাই না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’