• অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপার করছে নৌকা, বিপজ্জনক বাঁশের পারঘাটাও
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: চিত্র ১: গঙ্গার উপর নড়বড় করা নৌকায় ওঠার বাঁশের সাঁকো। দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে মেরেকেটে ন’ফুট বাই আড়াই ফুট। তার উপরেই অপেক্ষারত কমপক্ষে জনা পনেরো যাত্রী। 

    চিত্র ২: ওভারলোডেড সওয়ারি নিয়েই গঙ্গায় ভাসছে নৌকা। চড়ুইভাতির আনন্দে মশগুল ভিড়ের মধ্যে কার্যত হুঁশ নেই নিরাপত্তা নিয়ে। আর লাইফ জ্যাকেট তো নেই-ই। প্রশাসনিক ব্যর্থতার চিত্র প্রকট রানাঘাট সংলগ্ন গঙ্গা চর মঙ্গলদ্বীপে। বর্ষবরণের ভিড়কে যেন হাতছানি দিচ্ছে বিপদ। 

    বর্ষশেষের পিকনিক থেকে বর্ষবরণের আনন্দ, রানাঘাটের একাধিক ট্যুরিস্ট স্পট ইতিমধ্যেই গমগম করতে শুরু করেছে। আশপাশের বহু জেলা থেকে পর্যটকরা মঙ্গলদ্বীপে ঢুঁ মারছেন। কেউ ঘুরতে এসেছেন, কেউ চড়ুইভাতি করতে। পায়রাডাঙা পঞ্চায়েত এলাকায় গঙ্গায় চূর্ণী নদীর মোহনা শিবপুর এলাকায়। সেখানেই বাঁধা রয়েছে বাঁশের মাচা। নদীর মাঝে দ্বীপে যাওয়ার জন্য নৌকাগুলি এসে ভেড়ে সেখানেই। একইভাবে আবার মঙ্গলদ্বীপেও নৌকা ভেড়ার জন্য রয়েছে বাঁশের মাচা। বলাই বাহুল্য, সেই মাচা মোটেও পোক্ত নয়। বছরের অন্য সময় নড়বড়ে মাচা দিয়ে যাতায়াত করলেও খুব একটা সমস্যা থাকে না। কিন্তু পর্যটনের ভরা মরশুমে সেই নড়বড়ে মাচাই হাতছানি দিচ্ছে বিপদের। কারণ প্রশাসনের তরফে ভিড় নিয়ন্ত্রণের লোক না থাকার কারণে তাড়াতাড়ি নৌকা ধরতে অপরিসর মাচায় ভিড় করছেন প্রচুর মানুষ। যেকোনও মুহূর্তে তা গঙ্গায় ভেঙে পড়ে বড়সড় অঘটন ঘটতে পারে। কিন্তু তা নিয়ে হুঁশ বা সচেতনতা নেই কারও। এছাড়াও নৌকায় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে বাড়তি মুনাফার লোভে। দীর্ঘদিন ধরে এই ‘রুট’ চললেও তাঁদের লাইফ জ্যাকেট বলে কোনও বস্তুই নেই। তাই বিপদকে সঙ্গী করে গঙ্গার জলে ভাসছে নৌকা। 

    অবশ্য যাত্রীদের একাংশ এই অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। যেমন বনগাঁ থেকে আসা সুপ্রিয় বসাক বলেন, বছরের এই সময়টা বহু মানুষ এই নৌকা ব্যবহার করেন। তাই নিয়ন্ত্রণ খুব প্রয়োজন। কিন্তু সেটা দেখার মতো কেউ নেই। আমি যে নৌকায় মঙ্গলদ্বীপ এলাম, সেটায় অতিরিক্ত লোক নেওয়া হয়েছিল। গঙ্গার মাঝ বরাবর গিয়ে রীতিমতো ভয় করছিল। একই সুরে গাংনাপুর থেকে আসা অসিত বিশ্বাস বলেন, বাঁশের মাচাগুলো শালবল্লা দিয়ে বা কংক্রিটের করে পোক্ত করা দরকার। 

    যদিও বিষয়টি নিয়ে ব্লক ‘তৎপর’ বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্তারা। তাঁরা মঙ্গলদ্বীপের সৌন্দর্যায়ন, নদীপথের নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট ১ ব্লকের বিডিও জয়দেব মণ্ডল বলেন, আমরা নতুনভাবে মঙ্গলদ্বীপকে সাজানোর চেষ্টা করছি। সেই পরিকল্পনার তালিকায় বাঁশের মাচা, লাইফ জ্যাকেটের মতো বিষয়গুলিতেও নজর দেওয়া হবে। 

     ফেরি ঘাটের ভরসা নড়বড়ে বাঁশের মাচা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)