• রানিনগরের গোলাম ও হরিয়ানার রিম্পির ভোটার কার্ডের নম্বর এক! 
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • তামিম ইসলাম, ডোমকল: একজন গোলাম মাসুম। অন্যজন রিম্পি। পেশায় সমবায় ব্যাঙ্কের ম্যানেজার গোলাম। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার রানিনগরের বর্ধনপুরে। আর রিম্পির বাড়ি হরিয়ানায়। অর্থাৎ, পৃথক রাজ্যে বাস দু’জনের। অথচ, গোলাম ও রিম্পির ভোট ভোটার কার্ডের থাকা এপিক নম্বর একই। খোদ নির্বাচন কমিশনের সাইটেই দেখাচ্ছে ওই তথ্য। প্রথমদিকে বিষয়টিকে তেমন পাত্তা না দিলেও সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে চলা জঙ্গি-যোগের অভিযোগে গ্রেপ্তার ও ভোটার নিয়ে জালিয়াতির আবহে কার্যত ঘুম উবেছে গোলামের। জেলা প্রশাসনের কাছে  দ্রুত সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছেন গোলাম।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , এপিক নম্বর হল ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর। নিয়ম অনুসারে এপিক নম্বর সবসময় ইউনিক হয়। এমনকি, কোনও ভোটার তাঁর বাসস্থান বদল করলেও ভোটার পরিচয়পত্রে থাকা এপিক নম্বর একই থাকে। কিন্তু , নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে XYZ0997544  নম্বরের এপিক নম্বরটি দেশের দুই প্রান্তের দুই বাসিন্দার নামে ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত। এই একই নম্বরের ভোটার কার্ড রয়েছে গোলাম মাসুমের নামে। তাঁর বাড়ি রানিনগরের বর্ধনপুরে। সেই নম্বরে আরও একটি ভোটার কার্ড রয়েছে রিম্পি নামের এক যুবতীর। তিনি আবার হরিয়ানার বারওয়ালা বিধানসভার বাসিন্দা। একই ভোটার কার্ড নম্বরে এভাবে একাধিক ভোটার কার্ড থাকার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে বলছেন, যদি একই এপিকধারীদের মধ্যে একজন কোনও অপরাধমূলক কিছু ঘটায় তাহলে ওই এপিকের সূত্র ধরে অপরজনকে জড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়াও প্রশ্ন উঠছে, যে নম্বর ইউনিক থাকা বাধ্যতামূলক, সেই নম্বরই কি করে একাধিক ভোটার কার্ডে থাকছে? কাদের গাফিলতির কারণেই মারাত্মক এই ভুল? প্রশ্ন উঠেছে প্রতিটি মহলেই। 

    গোলামবাবু বলেন, আমি বছর চারেক আগেই বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলাম। তখন ততটা গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু এখন চারিদিকে জঙ্গি-যোগের অভিযোগে গ্রেপ্তার হচ্ছে ও তাদের কাছে থেকে ভুয়ো ভোটার কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। তারপর থেকেই আমার উদ্বেগ কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। আমার ভোটার কার্ডের সঙ্গে ওই যুবতীর ভোটার কার্ডের নম্বর এক। এখন যদি ওই যুবতী কোনও অপরাধমূলক কিছু করে এবং সেই সূত্র ধরে যদি আমাকে জড়িয়ে দেওয়া হয়, সেই ভয় হচ্ছে।? আমি চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক।

    পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সভাপতি রিপন শেখ বলেন, রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ডেটা তৈরির সময় ওই গোলামবাবুর বিষয়টি নজর আসে। গোলামবাবুর মতই আমাদের হাতে আরও বেশ কয়েকটি এইরকম একই এপিক নম্বরের একাধিক ভোটার কার্ড থাকার বিষয়টি নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছি। এটা বাংলার মানুষের প্রতি কোনও ষড়যন্ত্র বলেই মনে হচ্ছে।

    রানিনগর ২ ব্লক বিডিও কৃষ্ণ নির্মাল্য ভট্টাচার্য্য বলেন, বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানাচ্ছি। রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন বলেন , এটা কখনই হওয়া উচিত নয়। নির্বাচন কমিশনের উচিত, বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব নিয়ে দেখার। এভাবে ভুল না হওয়াই ভালো।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)