• পাকা রাস্তা তৈরি হলেই প্রচুর পর্যটক ছুটবেন অপরূপ সুন্দর বেলপাহাড়ীর গহম বাঁধ দেখতে 
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রামের অন্যতম পর্যটনস্থল বেলপাহাড়ী। নানা ঋতুতে প্রকৃতির রূপ এখানে বদলে যায়। পর্যটকরা দূরদূরান্ত থেকে বেলপাহাড়ী এলাকার গাডরাসিনি, ঢাঙ্গিকুসুম, ঘাঘরা জলপ্রপাত,খাঁদারানি হ্রদ, চাতন পাহাড় দেখতে ছুটে আসেন। পাহাড়ের কোলে গহম বাঁধ এলাকা এতদিন লুকিয়ে ছিল। ধীরে ধীরে হলেও এখানে ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা বাড়ছে। বিনপুর-২পঞ্চায়েত সমিতির তরফে স্থানটিকে পর্যটনস্থল হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে।

    বিনপুর-২ ব্লকের পাহাড়-ডুংরি ঘেরা তুলসীবনি সরোবর। স্থানীয়রা বলেন ‘গহম বাঁধ’, অর্থাৎ গভীর জলাশয়। সাধারণ মানুষের কাছে গজপাথর বাঁধ নামেও জায়গাটি পরিচিত।সরোবরকে ঘিরে আছে  শ্রীডুংরি, সেরেঞ ডুংরি আর খট্টাধরার অনুচ্চ পাহাড়। স্থানীয় ভাষায় ডুংরি মানে পাহাড়। বামদিক ঘেঁষে রয়েছে খুদি মহুলি পাহাড়। পিছনে চাতন ডুংরি আর পলাশ বন। সরোবরে ফোটে সাদা শালুক, গোলাপি শালুক এবং সাদার সঙ্গে বেগুনি-গোলাপি বিন্দুর শালুক।পর্যটকদের কাছে জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে অপরিচিত ছিল।বর্তমানে ধীরে ধীরে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। তবে যাওয়ার রাস্তা ভালো নয়। বেলপাহাড়ি ব্লক সদরের হদরা মোড় থেকে গাডরাসিনি পাহাড় যাওয়ার পিচ রাস্তায় বাঁদিকে মোরাম পথ ধরে ডোমগড় হয়ে এগলেই তুলসীবনি গ্রাম। এখানেই রয়েছে গহম বাঁধ। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে তুলসীবনি থেকে গজপাথর, কুসুমডাঙা হয়ে বালিচুয়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তার দাবি তুলছেন। রাস্তা হলে পর্যটকরা সহজে গাড়িনিয়ে এখানে বেড়াতে আসতে পারবেন। ওদলচুয়া থেকে মহুলবনি হয়ে তুলসীবনি পর্যন্ত পাকা রাস্তা হলে বেলপাহাড়ি সদর হয়ে গাডরাসিনি পাহাড় দেখে আগুইবিল ও মহুলবনিরপথে এখানে পর্যটকরা আসতে পারবেন। রাস্তা হলে বেলপাহাড়ীর পর্যটন মানচিত্রে নতুন একটি পর্যটনস্থল জায়গা করে নেবে । 

    স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষ গোয়ালা বলেন, পাহাড় ঘেঁষে আছে গহম বাঁধ। এই বাঁধের জলে স্থানীয় বাসিন্দারা চাষবাস করেন। শীতের সময় অল্প সংখ্যক পর্যটক এই এলাকায় বেড়াতে আসেন। ভালো রাস্তা ওপর্যটনস্থল হিসেবে জায়গাটি গড়ে তোলা হলে এলাকার মানুষ আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন। ঝাড়গ্ৰাম হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, বেলপাহাড়ী এলাকার গহম বাঁধ অন্যতম পর্যটনস্থল হয়ে উঠতে পারে। রাস্তা ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তুললে পর্যটকরা আসবেন। 

    বেলপাহাড়ী পর্যটন মানচিত্রে নতুন এক জায়গা স্থান করে নেবে। শিমুলপাল পঞ্চায়েতের প্রধান লছমি হেমব্রম এদিন বলেন, এই এলাকার মানুষ চাষবাস ও দিনমজুরির কাজ করে সংসার চালান। গ্ৰাম পঞ্চায়েতের তরফে এলাকায় উন্নয়নের কাজ চলছে। এলাকায় রাস্তাঘাট হয়েছে।তবে তুলসীবনি গ্ৰাম থেকে বাঁধ পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা নেই। পর্যটনস্থল হিসেবে জায়গাটি গড়ে তোলা হলে এলাকার আর্থিক উন্নয়ন হবে। পঞ্চায়েত সমিতিকেও বিষয়টি দেখার জন্য জানানো হয়েছে।বিনপুর-২ পঞ্চায়েতে সমিতির সভাপতি বিকাশচন্দ্র সিং বলেন, বেলপাহাড়ী এলাকার পর্যটনস্থলগুলোকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটছে। বেলপাহাড়ীর গহম বাঁধ এতদিন অজ্ঞাত ছিল বলা চলে। পাহাড়,জঙ্গল নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই এলাকা‌। অল্পসংখ্যক পর্যটক এখানে আসেন।পর্যটনস্থল হিসেবে জায়গাটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)