নিজস্ব প্রতিনিধি, লোহাটিকরি: সরকারি প্রকল্পের বাড়ি যদি কেউ দেয়, তবে তা দেবেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মেদিনীপুর বিধানসভার উপ নির্বাচনের সময় লোধা-শবর গ্রামে গিয়ে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। নতুন বছর শুরুর আগেই সরকারি বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় বাড়ি পাওয়ায় আনন্দে আত্মহারা গ্রামের মানুষ। তাই গ্রামের বাসিন্দারা তৃণমূল নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন। ছবিটা মেদিনীপুর সদর ব্লকের লোহাটিকরি গ্রামের। এই গ্রামেই ৩০ থেকে ৪০টি লোধা পরিবারের বসবাস।
এতদিন বাড়ি না পাওয়ায় ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল গ্রামের বাসিন্দাদের। একসময় বাড়ি পাওয়ার আশা তাঁরা ছেড়ে দিয়েছিলেন। গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, প্রতিটি মাটির বাড়ির দেওয়ালের দৈন্যদশা। দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু কোনও সুরাহা মিলছিল না। জানা গিয়েছে, এই গ্রামেই উপ নির্বাচনের প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতাকে কাছে পেয়ে বাড়ি নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন রাজীববাবু সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। রাজীববাবুর কথায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। অবশেষে ওই এলাকার বেশিরভাগ পরিবার বাড়ি পাচ্ছেন।
এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিলে তা রাখেন। ওই গ্রামের মানুষ বাড়ি নিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। ধাপে ধাপে ওই প্রত্যন্ত এলাকার সবক’টি পরিবার বাড়ি পাবেন। ভোটের সময় কথা দিয়ে এসেছিলাম। গ্রামবাসীদের স্বপ্নপূরণ হওয়ায় খুশি।
গ্রামবাসী মিতালি মল্লিক বলেন, ভোটের সময় সকলেই প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সবাই পূরণ করতে পারেন না। বাড়ি পাওয়ায় উপকার হবে। বর্ষাকালে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হতো। খড়ের চাল থেকে জল পড়ত।
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে লোহাটিকরি গ্রাম। এই গ্রামের লোধাপাড়ায় ৩০ থেকে ৪০টি পরিবারের বসবাস। বংশপরম্পরায় তাঁরা বিড়ি তৈরির কাজ করে আসছেন। এছাড়াও লোধা পরিবারের সদস্যরা দিনমজুরের কাজও করেন। ‘ডানা’ ঘূর্ণিঝড়ের ফলে এই গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। তাই খড়ের চালের উপর ত্রিপল খাটিয়েই তাঁরা বসবাস করছেন। গ্রামের বাসিন্দারা বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেলেও বাড়ি না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছিলেন। অবশেষে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের তালিকায় নাম আসায় তাঁরা খুশি।