সংবাদদাতা, পতিরাম: বছরের শেষ দিনে পুরসভায় ঢুকতে এসে বাধার মুখে পুরচেয়ারম্যান অশোককুমার মিত্র। মঙ্গলবার এ নিয়ে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় বালুরঘাট পুরসভায়। কাজ করেও প্রাপ্য বেতন না পেয়ে কর্মবিরতি করছিলেন বালুরঘাট পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের একাংশ। পুর চেয়ারম্যানকে পুরসভায় দেখেই ক্ষেপে ওঠেন তাঁরা। বিক্ষোভের জেরে চাপে পড়ে যান অশোক। যদিও পরে পুরসভায় কোনওভাবে ঢুকতে সক্ষম হন চেয়ারম্যান। এরপর সাফাই কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। দীর্ঘ আলোচনার পর দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে দেবার আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি তুলে নেন সাফাই কর্মীরা। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে চেয়ারম্যান বলেন, নভেম্বরে বালুরঘাট পুরসভায় বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছে। অনেকেই ওই বায়োমেট্রিক মেশিনে হাজিরা দেননি। কয়েকজন হাজিরা দিয়েছেন। কিছুক্ষেত্রে বেতন দিতে গিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। সংখ্যাটা অনেক কম। আজ বৈঠকে বসেছিলাম। গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। অনেকটাই মিটিয়ে ফেলেছি। ওরা আমাকে জানিয়েছে, আর কর্মবিরতি করবে না। এবিষয়ে নর্থবেঙ্গল হরিজন অ্যান্ড বাসফোর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি বিজয় বাসফোর বলেন, বহু কর্মী রয়েছে, যারা কাজ করেও বেতন পাচ্ছে না। আবার অনেক কর্মী রয়েছে, যারা পুরো মাসের কাজ করে অর্ধেক বা কম বেতন পেয়েছেন। আমরা সোমবার পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম। কিন্তু উনি আমাদের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলতে চাননি। তাই আজ বিক্ষোভ চলে। পরে এদিন বৈঠক হয়েছে। আমরা কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছি। পুরসভা সূত্রে খবর, বালুরঘাট পুরসভার অধীনে প্রায় ৮০০ সাফাইকর্মী রয়েছেন। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, ওই সাফাই কর্মীদের প্রায় ৮০জন নভেম্বর মাসে বায়োমেট্রিকে উপস্থিতি দেননি। ওই সাফাই কর্মীদের হদিশ পাওয়া যায়নি বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এদিকে সাফাইকর্মীদের অনেকেই বায়োমেট্রিকে হাজিরা দিলেও তাঁরা বেতন পাননি বলে অভিযোগ। কারও এক সপ্তাহের বেতন পেয়েছে, কেউ ১৫দিনের পেয়েছে। এদিন বিক্ষোভ চলাকালীন চেয়ারম্যান পুরসভায় বাধার মুখে পড়েন। কিছুক্ষণ চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিসে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সাফাই কর্মীদের বিক্ষোভে দিনভর উত্তাল হয় পুরসভা চত্বর। শহরের অনেক এলাকায় দিনভর সাফাই করতে দেখা যায়নি কর্মীদের। ফলে বছরের শেষ দিনে অনেক জায়গাতেই আবর্জনা জমে থাকে। বালুরঘাট পুরসভায় সাফাই কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভ। -নিজস্ব চিত্র