• আলিপুরদুয়ারেও ছদ্মবেশে ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করেছিল নূর ও গাজি 
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: যুবকদের মগজ ধোলাইয়ের উদ্দেশ্যেই আলিপুরদুয়ারে কয়েকদফা ঘুরে গিয়েছিল বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) আইইডি বিশেষজ্ঞ নুর ও তার ডান হাত গাজি রহমান। তারা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এসেছিল। অসম ও মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ধৃত জঙ্গিদের জেরা করেই এমন তথ্য গোয়েন্দারা পেয়েছেন।

     গোয়েন্দা সূত্রে খবর, একাধিকবার নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলায় আসে এবিটি জঙ্গিরা। সেই তালিকায় সংগঠনের আইইডি বিশেষজ্ঞ নুর ও তার ডান হাত গাজি রহমানও রয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিস। পাশাপাশি জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে পুলিস জেলার অসম, কোচবিহার ও ভুটান সীমানায় নজরদারি বাড়িয়েছে। 

    আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী অবশ্য বলেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়টি এসটিএফ দেখছে। তাদেরকে আমরা সবরকমভাবে সহযোগিতা করছি। একই সঙ্গে জেলা পুলিস সতর্ক রয়েছে। 

    শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ কার্যত জঙ্গিদের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। যাদের টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ, অসম সহ ভারতে নাশকতা চালানো। এজন্যই এবিটি অসম ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় স্লিপার সেল খুলেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিসের এসটিএফ। ধৃতদের জেরা করেই তারা ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারে স্লিপার সেলের খবর পেয়েছে। 

    গোয়েন্দা সূত্রে খবর, অসমের কোকরাঝাড়ে মডিউল তৈরি করে এবিটি। সেখানে যুবকদের মগজ ধোলাই করা হতো। পাশাপাশি অস্ত্র চালানো থেকে আইইডি তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলেও খবর। সংশ্লিষ্ট মডিউল থেকেই আলিপুরদুয়ারে স্লিপাল সেল তৈরির ছক কষা হয়েছিল। এজন্য সেখান থেকে সড়ক পথে ও ট্রেনে একাধিকবার এবিটি জঙ্গিরা আলিপুরদুয়ারে এসেছিল। এই জেলার ফালাকাটা ছিল জঙ্গিদের নজরে। কিন্তু জঙ্গিদের নজরে আলিপুরদায়ার কেন? উত্তরবঙ্গের পাহাড়, নদী, চা বাগান ও জঙ্গল বেষ্টিত জেলাগুলির মধ্যে আলিপুরদুয়ার অন্যতম। এই জেলার পাশেই প্রতিবেশী রাজ্য অসম এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভুটান। এর পাশেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহার। এমন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন সোর্স এবং অসম পুলিসের দেওয়া তথ্য ঘাঁটাঘাটি করে গোয়েন্দারা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, অসমের কোকরাঝাড় থেকে বারোবিশা, শামুকতলা হয়ে সহজে সড়ক পথে আলিপুরদুয়ারে আসা যায়। আবার অসম থেকে কোচবিহার কিংবা দিনহাটা, মাথাভাঙা ও তুফানগঞ্জের বিভিন্ন বাংলাদেশ সীমান্ত থেকেও সহজে আসা যায় আলিপুরদুয়ারে। ট্রেনেও অসম ও আলিপুরদুয়ারের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম। এমন ভৌগোলিক অবস্থানের জেরেই সংশ্লিষ্ট জেলাকে বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশি জঙ্গিরা। এখানে তারা টোটোচালক, রাজমিস্ত্রি সহ দিনমজুরের বেশে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাত বলেই মনে হচ্ছে। 

    এদিকে, প্রায় সাত মাস আগে ফালাকাটায় ভারতীয় নাগরিকত্বের জাল নথি তৈরির চক্রের হদিশ মেলে। অভিযোগ, সেখান থেকে বাংলাদেশিদের জাল ভারতীয় আধারকার্ড ও সচিত্র ভোটারকার্ড তৈরি করে দেওয়া হতো।
  • Link to this news (বর্তমান)