• বছর শেষ, এখনও নাম চূড়ান্ত হল না বঙ্গ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বছর কার্যত শেষ হয়ে গেল। অথচ এখনও রাজ্য বিজেপির পরবর্তী সভাপতির নাম চূড়ান্ত করতে পারলেন না পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। গত সেপ্টেম্বরে সুকান্ত মজুমদার বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে নিজের মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। আর আগে থেকেই ওই পদে একাধিক নেতার নাম নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর বছর কেটে গেলেও ‘হট সিটে’ বসার মতো যোগ্য নেতা খুঁজে পেল না গেরুয়া শিবির। জানা গিয়েছে, দিলীপ ঘোষকে ২০২১ সালে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে দলের অন্দরে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, যা এখনও চলছে। দিলীপবাবু পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন। পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটে বিজেপির জয়ের ধারা তাঁর আমলে শুরু হয়েছিল। পাশাপাশি দিলীপ ঘোষের সভাপতিত্বে দল ১৮ জন এমপি এবং ৭৭ জন বিধায়ক পেয়েছে। সব মিলিয়ে ভোটের রাজনীতিতে বাংলায় বিজেপির উজ্জ্বল উপস্থিতি মেদিনীপুরের প্রাক্তন এই এমপির নেতৃত্বেই সুনিশ্চিত হয়।

    এই প্রসঙ্গে দলের এক আদি নেতা বলেন, দিলীপবাবুর বিরাট সাফল্যের পর সুকান্ত মজুমদারের পক্ষে সেই ধারা বজায় রাখা কঠিন ছিল। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের ফল বলছে, সবেতেই পিছিয়ে রয়েছেন বর্তমান রাজ্য সভাপতি। কর্মী কিংবা নিচুতলার মাঝারি কিংবা ছোট নেতাদের উপর দিলীপ ঘোষের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু সুকান্তবাবুর জমানায় সেই রাশ অনেকটাই আলগা হয়ে গিয়েছে। তাই রাজ্য, জেলা কিংবা মণ্ডল স্তরে পার্টির হতশ্রী দশাই আরও প্রকট হচ্ছে। ওই নেতা আরও বলেন, তৃণমূল থেকে আসা কিছু ‘মাতব্বর’ এবং ‘তৎকাল’ বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারকে ডোবাচ্ছেন। কারণ, ওইসব নেতার বুদ্ধিতে পরিচালিত হয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেকে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর রাজ্য সভাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। গোটা রাজ্যের সাধারণ বিজেপি নেতা-কর্মীদের রাজ্য সভাপতি হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। সূত্রের দাবি, পরবর্তী রাজ্য সভাপতির নাম নিয়ে দিল্লির নেতারা বহুবার আলোচনায় বসেছেন, কিন্তু গ্রহণযোগ্য মুখ এখনও পাওয়া যায়নি! তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) সিলমোহর নিতে হবে বিজেপিকে। আরএসএসের প্রাক্তন প্রচারক দিলীপ ঘোষকে যে-কায়দায় রাজ্য সভাপতির কুর্সি থেকে সরানো হয়েছিল, তা নিয়ে সঙ্ঘ খুশি ছিল না। তাই এবার নতুন রাজ্য সভাপতি বাছার ক্ষেত্রে আরএসএস নানাদিক খতিয়ে দেখেই সবুজ সঙ্কেত দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
  • Link to this news (বর্তমান)