• জোরালো উত্তুরে হাওয়ায় বর্ষ বিদায়, মুহূর্তে শহরে ফিরল শীতের আমেজ
    বর্তমান | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উত্তুরে হাওয়া জোরালো হতেই মঙ্গলবার বছরের শেষদিনে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শীতের আমেজ কিছুটা ফিরে এল। তাপমাত্রা কমেছে উত্তরবঙ্গেও। সব জায়গাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় নরম মনোরম শীতের ছোঁয়ার মধ্য দিয়েই পুরনো বছর বিদায় নিয়েছে। আজ, বুধবার নতুন বছরের প্রথম দিনে কলকাতাসহ অনেক স্থানেই শীতের মাত্রা আরও কিছুটা বাড়বে বলে আশা করছেন আবহাওয়াদিরা। কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ আরও কমে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে আসতে পারে। তবে এই দফায় কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে জাঁকিয়ে শীত পড়ছে না। শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বড় জোর ১৪ ডিগ্রির আশপাশে আসতে পারে। ৪ জানুয়ারি নাগাদ পশ্চিম হিমালয়ের উপর একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসছে। তার প্রভাবে ওইসময়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ফের কিছুটা বাড়বে। ঝঞ্ঝা সরে গেলে আবার কমবে তাপমাত্রা। 

    দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই তাপমাত্রা কমেছে। তবে কলকাতায় সর্বনিম্ন  তাপমাত্রার সোমবারের তুলনায় বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। কলকাতার যে তাপমাত্রা আবহাওয়া দপ্তর প্রকাশ করে, আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরে তা নথিভুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার ভোরে সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নথিভুক্ত হয় ১৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি সোমবার ছিল ১৭.৬ ডিগ্রি। তবে সকাল থেকে উত্তুরে হাওয়া বইতে থাকায় শহরে দিনভরই শীতের আমেজ বজায় ছিল। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (২২.৬ ডিগ্রি) সোমবারের তুলনায় প্রায় ৪ ডিগ্রি কমে যায়। এটা স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তুলনায় প্রায় ৪ ডিগ্রি কম ছিল।  

    আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা এইচ আর বিশ্বাস জানান, ভোরের দিকে আলিপুর এলাকায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকার কারণে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেমন কমেনি। কিন্তু কলকাতা সংলগ্ন সল্টলেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেকটাই কমেছে। সোমবার সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.১ ডিগ্রি। সেটি মঙ্গলবার কমে হয়েছে ১৬.৯ ডিগ্রি। এদিন ১৬.৪ ডিগ্রি ছিল দমদমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি নিম্নগামী হয়েছে। পুরুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সোমবার ১৪ ডিগ্রি অতিক্রম করে, মঙ্গলবার তা হয়েছে ১০.১ ডিগ্রি। পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা আপাতত আর বিশেষ কমবে না বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। 

    তাঁরা বলছেন, পশ্চিম হিমালয়ে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আগমন ও দক্ষিণবঙ্গের বায়ুমণ্ডলে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ পুবালি বাতাস ঢুকলে শীতকালে তাপমাত্রা বাড়ে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এলে উত্তুরে হাওয়া দুর্বল হয়ে যায়। এই সময় পুবালি বাতাসও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এতে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিামণ বাড়ে। কোনও কোনও স্থানে হাল্কা বৃষ্টিও হয়। বড়দিনের সময় দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং কোনও কোনও জয়গায় হাল্কা বৃষ্টি হয় এই কারণেই। আবহাওয়াবিদদের মতে, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় জাঁকিয়ে শীত পড়ার সময় এখনও পেরোয়নি। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত কলকাতায় তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাওয়ার একাধিক নজির রয়েছে। দুটি ঝঞ্ঝার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান বেশি হলে উত্তুরে হাওয়া বেশিদিন স্থায়ী হয়। জাঁকিয়ে শীতও পড়ে তখন। 
  • Link to this news (বর্তমান)