এই সময়, দিঘা: বর্ষশেষের সূর্যাস্তকে সাক্ষী রেখে ‘ক্লিন দিঘা’র উদ্যোগ নিল দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে দিঘার হোটেল মালিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে ২৭ ডিসেম্বর একপ্রস্ত বৈঠকও সেরে ফেলেছে তারা। বৈঠকে হোটেলগুলির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি জেলা পুলিশের ‘স্বাগত পোর্টালে’ পর্যটকদের নাম ও অন্যান্য তথ্য নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নতুন বছরের এপ্রিলেই সকলের জন্যে দরজা খুলে যাবে দিঘার জগন্নাথ ধাম বা মন্দিরের। তার আগে দিঘাকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করে তোলার কাজ চলছে জোরকদমে। সবুজায়নে জোর দেওয়া হচ্ছে। দূষণ সমস্যা মেটাতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের উপরে নতুন বছরে সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পর্যটক সংক্রান্ত তথ্য পোর্টালে তোলার ব্যাপারেও। কয়েক মাস আগে জেলা পুলিশের উদ্যোগে ‘স্বাগত পোর্টাল’ চালু করা হয়েছিল।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪০ শতাংশ হোটেল কর্তৃপক্ষ এই পোর্টালে তথ্য জমা করছেন। এই পোর্টালে পর্যটকদের তথ্য আপলোড করা হলে পুলিশ পর্যটকদের উপরে যেমন নজর রাখতে পারে, তেমনই টিসিএসি (ট্যুরিস্ট সিভিক অ্যামেনিটিস চার্জ) জমা পড়ে পর্ষদের ঘরে। কিন্তু তথ্য ঠিক মতো জমা না–পড়ায় কত পর্যটক হোটেলে উঠেছেন, তা জানা যাচ্ছে না।
ফলে এক দিকে যেমন পুলিশের নজরদারিতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনই টিসিএসি চার্জও জমা পড়ছে না পর্ষদের কাছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০২৩ সাল থেকে বকেয়া টিসিএসি চার্জ মিটিয়ে দিতে হবে হোটেলগুলিকে। যদি এরপর স্বাগত পোর্টালে তথ্য তোলা না হয়, তা হলে পর্যটক প্রতি ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। শুধু তাই নয়, কোনও হোটেল থেকে রাস্তায় আবর্জনা ফেলা হলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে।
দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, ‘নতুন বছরে পর্যটকদের সামনে এক পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর দিঘাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে সকলের সহযোগিতা নিয়ে। সকলে যাতে নিয়ম মানে তার জন্যে কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’
বর্ষবরণে দিঘা–মন্দারমণিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে। অনেক দিন পরে মন্দারমণির ১০০ শতাংশ হোটেল ও দিঘার ৭০ শতাংশ হোটেল বুকিং হয়ে গিয়েছে। আগামী রবিবার পর্যন্ত হোটেলগুলির বুকিং ভালো হয়েছে বলে হোটেল মালিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভিড়ের মধ্যে সাদা পোশাকে পুলিশও নজর রাখবে বলে জানিয়েছেন ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি)আবুনুর হোসেন।
দিঘা শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রশাসনের সমস্ত নির্দেশ মেনে চলার পাশাপশি দিঘাকে পরিচ্ছন্ন করে তুলতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে হোটেলগুলি।’