• মাইথনে যত্রতত্র বনভোজন নয়! বছরের পয়লা দিনে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা বন দফতরের
    আনন্দবাজার | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
  • বনভোজনের নামে যত্রতত্র রান্নার আয়োজন, উনুন জ্বালানো নয়। চলবে না উচ্চস্বরে গানবাজনা। পটকা ফাটানো নৈব নৈব চ। পশ্চিম বর্ধমানের মাইথনের জঙ্গলে পিকনিক করার ক্ষেত্রে এমনই নিষেধাজ্ঞা জারি করল বন দফতর। ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই ওই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। এমনকি, স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের তরফে মাইথনের কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র ওই জায়গাগুলিতেই পিকনিক করা যাবে। গানবাজনা হতেই পারে। তবে শব্দ যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। ১ জানুয়ারি মাইথন জলাধারের আশপাশে এই রকম নির্দেশিকা লিখে প্ল্যাকার্ড টাঙানো হয়েছে।

    বর্ষশেষ হোক বা বছরের প্রথম দিন— মাইথনে প্রচুর মানুষ বনভোজন করতে আসেন। আসানসোলে ঘোরার জায়গা বা পিকনিকের কথা ভাবলেই প্রথমেই আসে মাইথন জলাধারের নাম। শীতের সকাল থেকেই দেখা যায় মানুষের ভিড়। কিন্তু এ বছর অন্য রকম। মাইথন জলাধারের পাশে জঙ্গলে বনভোজনে নানা বিধিনিষেধ জারি করেছে প্রশাসন। আসানসোলের সালানপুর ব্লক প্রশাসন চিহ্নিত করে দিয়েছে, কোন কোন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে পিকনিক করা যাবে। বড় বড় ব্যানারে বিভিন্ন নির্দেশ লেখা রয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে দিতে হবে জরিমানা। জেলা প্রশাসন মনে করছে, ২৫ ডিসেম্বর যে ভাবে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়েছিল, বছরের প্রথম দিনেও তেমন ভিড় হতে পারে। গত রবিবারও লক্ষাধিক ভিড় হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। তার পরেই এই তৎপরতা এবং নির্দেশিকা।

    বন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, মাইথনের থার্ড ডাইক, মিলেনিয়াম পার্ক, রাইফেল শুটিং রেঞ্জ-সহ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। কেবলমাত্র ওই জায়গাগুলিতে পিকনিক করা যাবে। অনুমতি ছাড়া কেউ গভীর জঙ্গলে বেড়াতে যেতে পারবেন না। প্লাস্টিক বা থার্মোকলের থালা বা অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। মদ্যপান করে জঙ্গলে সময় কাটানো যাবে না। বন্যপ্রাণ রক্ষার্থেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন বনকর্তারা।

    মাইথনে গেলে অনেকেই কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেন। তার পর রয়েছে নৌকোবিহারের ব্যবস্থা। লাইভ জ্যাকেট গায়ে দিয়ে নৌকায় কয়েকটি দ্বীপে বেড়িয়ে আসতে পারেন। গাছপালায় ঘেরা, ফুলের মেলায় ভরা শান্ত এবং মনোরম পরিবেশের জন্য মাইথন বেড়াতে আসেন কলকাতা, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, হুগলি ইত্যাদি জেলার মানুষ। এ ছাড়া লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রচুর পর্যটক আসেন। সকলের নিরাপত্তার জন্য বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানা অঞ্চলে কড়াকড়ি করা হয়েছে পুলিশি ব্যবস্থায়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্র্যাফিক গার্ড থানার পুলিশের ক্যাম্প হয়েছে নানা জায়গায়। পুলিশের বিশেষ দল যখন-তখন নজরদারি করছে। জলে-জঙ্গলে কেউ বিপদে পড়লে তাড়াতাড়ি উদ্ধারের জন্য পুলিশের পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স টিম থাকছে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)