দূষণ রোধে ৬ জেলায় গঙ্গাবক্ষে চলবে ২২টি পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক ভেসেল
হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ জানুয়ারি ২০২৫
জ্বালানির দাম লাগাতার বেড়েই চলেছে। তার ওপর জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে দূষণও বাড়ছে। এই অবস্থায় কলকাতা ও সংলগ্ন বিভিন্ন ফেরিঘাটে ব্যাটারি চালিত ভেসেল নামানোর সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল পরিবহণ দফতর। এবার জেলার বিভিন্ন ফেরিঘাটেও দূষণ রোধ ও জ্বালানি খরচ কমাতে ই-ভেসেল বা বৈদ্যুতিক লঞ্চ চালানোর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। তারমধ্যে একটি ই-ভেসেল ইতিমধ্যেই তৈরি সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। দ্রুত সেটির সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৬টি জেলায় ৯টি ফেরিঘাটে এই ২২টি বৈদ্যুতিক ভেসেল চালানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এই সমস্ত লঞ্চগুলি হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ অন্যান্য জেলার বিভিন্ন ঘাটে যাত্রীদের পরিষেবা দেবে বলে জানা গিয়েছে। এরফলে যেমন জ্বালানি খরচ বাঁচবে, তেমনি দূষণ কমবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে আর্থিক সাহায্য নিয়ে এই ভেসেলগুলি প্রস্তুত করার পরিকল্পনা রয়েছে। যারমধ্যে যে ভেসেলটি ইতিমধ্যেই প্রস্তুত হয়েছে সেটির জন্য খরচ পড়েছে ৬ কোটি টাকা। এই লঞ্চ তৈরি করেছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। এর যাত্রী বহন ক্ষমতা হল ১৫০ জন। জানা গিয়েছে, এই লঞ্চটি বাবুঘাট থেকে হাওড়ার বেলুড় মঠ এবং দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে চলাচল করবে। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত ১৫০ জন যাত্রী বহন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি লঞ্চ চালাতে গেলে এক ঘণ্টায় ১০ লিটার ডিজেল খরচ হয়। সেই জায়গায় ব্যাটারি চালিত এই লঞ্চ দু ঘণ্টা পর্যন্ত একটানা চলতে পারবে। এই সময়ে ৩০ কিলোমিটার যাতায়াত করতে পারবে লঞ্চটি।
তবে অন্যান্য যে লঞ্চগুলি তৈরি করা হবে সেগুলির যাত্রী বহন ক্ষমতা থাকবে ৮০ থেকে ১০০ জন। সেগুলির চার্জও কিছুটা কম থাকবে। এই ভেসেলগুলি গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতা অথবা কলকাতা থেকে গঙ্গাসাগরে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। পরিবহণ দফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই ভেসেলগুলিতে বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা থাকবে। ফলে যাবতীয় বর্জ্য লঞ্চে জমা হওয়ার পর সেগুলি ঘাটে পরিষ্কার করা হবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রাজ্য পরিবহণ দফতর। এই টাকায় বিভিন্ন জেটিঘাটের সংস্কার হবে। সেগুলি হল গৌরহাটি, রাসমণি ঘাট, গাদিয়াড়া, আউট্রাম ঘাট, বাঁশবেড়িয়া, দেবীতলা প্রভৃতি। এখানে নতুন করে আলো বসানো হবে। স্মার্ট কার্ড গেট বসানোর পাশাপাশি শৌচালয় তৈরি করা হবে। তাছাড়া মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ৯ টি ই ভেসেলের নামকরণ করে ফেলেছেন। যার মধ্যে রয়েছে এমভি সংগীত, এমভি সরস্বতী, এমভি আত্রেয়ী, এমভি শীলাবতী, এমভি রঙ্গিত, এমভি সঙ্গী, এমভি চাকাচাকি প্রভৃতি।