• স্কুলে ঢুকতে হবে ১০টা ৩৫ মিনিটেই, শিক্ষকদের টিউশনেও মানা, নির্দেশিকা শিক্ষাদপ্তরের 
    বর্তমান | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: নির্দেশিকা আগেই ছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই বহু স্কুলশিক্ষক টিউশনি পড়াচ্ছেন। পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্নপত্র আসতে পারে তা নিয়ে তাঁরা সাজেশনও দিচ্ছেন। এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে শিক্ষাদপ্তর। প্রতিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে একগুচ্ছ নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা টিউশনি পড়াতে পারবেন না। কেউ কোনও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্থ উপার্জন হয় এমন কিছু করা যাবে না। পড়ুয়াদের মানসিক এবং দৈহিক শাস্তি দেওয়া যাবে না বলেও জানানো হয়েছে।

    শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু শিক্ষক নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে ঢোকেন না। তাঁরা ইচ্ছেমতো এসে ক্লাস করেন। এবার থেকে তাও করা যাবে না। শিক্ষাদপ্তর নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, ১০টা ৩৫মিনিটের মধ্যে স্কুলে ঢুকতে হবে। ১০টা ৪০ থেকে ১১টা ১৫মিনিটের মধ্যে কেউ স্কুলে ঢুকলে লেট মার্ক দেওয়া হবে। তারপর কেউ স্কুলে এলে অনুপস্থিত হিসেবে ঘোষণা করা হবে। ক্লাসের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারে আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে। পড়ুয়া বা শিক্ষক কেউই ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। সাড়ে ৪টের আগে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা স্কুলের বাইরে যেতে পারবেন না। কারও খুব প্রয়োজন হলে তাঁকে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। স্কুল চত্বরে কোনওরকম তামাক সেবন করা যাবে না। এরকম ৩০টি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বর্ধমানের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতিটি নির্দেশ কার্যকর করা হবে। 

    স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের টিউশনি পড়ানো নিষিদ্ধ হলেও শহর গ্রাম সর্বত্র একই ছবি। বর্ধমান, মেমারি শহরেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চুটিয়ে টিউশনি পড়াচ্ছেন।  পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু কোনার বলেন, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের টিউশনি পড়ানো উচিত নয়। বহুদিন আগেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরও বহু শিক্ষক বাড়তি রোজগারের জন্য টিউশনি পড়াচ্ছেন। সরকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা দেন। তারপর তাঁরা আইন বিরোধী কাজ করছেন।  নির্দেশ অমান্য করে তাঁরা আগামী দিনেও এমনটা করলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আচরণ ঠিক করতে হবে। অনেকেই ছাত্রছাত্রীদের সামনেই নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে যান। একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাতে পড়ুয়াদের মধ্যে প্রভাব পড়ে। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তিনি সরাসরি শিক্ষাদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন। পড়ুয়াদের সামনে কখনোই নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়ানো যাবে না। 

    শিক্ষাদপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদেরও ১০টা ৩৫মিনিটের মধ্যে স্কুলে ঢুকতে হবে। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বলেন, শিক্ষক শিক্ষিকারা আন্তরিকতা দেখালে সরকারি স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন আরও উন্নত হবে। অভিভাবকরা আরও বেশি করে ছেলেমেয়েদের সরকারি স্কুলে পাঠাবেন। বেসরকারি স্কুলগুলিতে ভর্তির জন্য লম্বা লাইন পড়বে না।
  • Link to this news (বর্তমান)