• নার্সিং কলেজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা
    বর্তমান | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যালের নার্সিং কলেজে সাকুল্যে তিনজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। ফলে তাঁরা ছুটি নিলে বা বিশ্রামে থাকাকালীন সপ্তাহে অন্তত তিনদিন নার্সিং কলেজ ‘অরক্ষিত’ থাকে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার(সদর)পরিদর্শনে গিয়ে উষ্মা প্রকাশ করার পর  বিষয়টি মেনে নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের হস্টেলের অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে ছাত্রীরা চাঁদা তুলে এক ব্যক্তিকে হস্টেল চত্বর দেখভালের জন্য রেখেছেন। মঙ্গলবার জেলা পুলিসের আধিকারিকরা হস্টেলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করতেই বিষয়টি সামনে আসে। এই পরিস্থিতিতে সামগ্রিকভাবে নার্সিং কলেজ ও হস্টেলের ঢিলেঢালা নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

    উল্লেখ্য, আর জি কর পরবর্তী সময়ে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, নার্সিং কলেজ, হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়মিত পর্যালোচনা করা হয়। কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিস-প্রশাসনও বিষয়টি ‘মনিটরিং’ করে। মঙ্গলবার জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার(সদর) সিদ্ধার্থ দোর্জি হাসপাতালে যান। হাসপাতালে থাকা পুলিস ক্যাম্পের অধুনিকীকরণের কাজ পরিদর্শনের পাশাপাশি তিনি নার্সিং কলেজ ও হস্টেলের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেন। কিছুদিন আগেই হস্টেল সংলগ্ন এলাকা থেকে দুই চোর ধরা পড়ে। সম্প্রতি একজন পাঁচিল টপকে পালায় বলে ক্যাম্পের আধিকারিকরা অতিরিক্ত পুলিস সুপারকে জানান। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে নার্সিং কলেজ ও হস্টেলে কোনও নিরাপত্তারক্ষীর দেখা পাননি। রক্ষীর পরিবর্তে বাঁকুড়ার সোনামুখী ও পুরুলিয়ার বাসিন্দা দুই নার্সিং ছাত্রী কলেজ ও হস্টেলের গেটের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিস সুপার কথা বলেন। পুরো বিষয়টি বুধবার ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিরপত্তারক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক আধিকারিক আশ্বাস দিয়েছেন।

    তিনি বলেন, নার্সিং কলেজ আমাদের ক্যাম্পাসে থাকলেও তা স্বশাসিত। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বর্তমানে নিরপত্তারক্ষীর ঘাটতি নেই বললেই চলে। নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ রক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধির আবেদন উপরমহলে জানিয়েছিল কি না, তা খোঁজ নেব। প্রয়োজনে নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। 

    নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষা লক্ষ্মী পণ্ডিত বলেন, আমাদের কলেজে মাত্র তিনজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। একটানা কাউকে কাজ করানো যায় না। ফলে সপ্তাহে তাঁদের এদিন করে ‘ডে অফ’ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে যাঁর ডিউটিতে থাকার কথা ছিল তাঁকে ওইদিন ‘ডে অফ’ দেওয়া হয়েছিল। ফলে কলেজে কোনও রক্ষী ‘মর্নিং শিফটে’ ছিলেন না। রক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলে ভালো হয়। তবে ছাত্রীদের দিয়ে রক্ষীর কাজ করানোর বিষয়টি ঠিক নয়। তারা মূলত কলেজের প্রশাসনিক কাজ সামলায়। সেটা তাদের কোর্সের মধ্যেই রয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীদের অবর্তমানে কলেজ বা হস্টেলের সুরক্ষার দিকটি চতুর্থ শ্রেণির  কর্মীরা দেখে থাকেন।
  • Link to this news (বর্তমান)