প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট চালু হলেও সংগ্রহ হচ্ছে না ক্যারিব্যাগ
বর্তমান | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দেড় মাস আগে শিলিগুড়িতে প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট চালু হলেও সংগ্রহ হচ্ছে না নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার হাট ও বাজারের যত্রতত্র প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ সহ পরিত্যক্ত পাত্র ছড়িয়ে থাকছে। এমনকী প্লাস্টিকের জেরে কার্যত বুজে গিয়েছে কিছু নিকাশিনালা। বিভিন্ন মহল এনিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তারা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এব্যাপারে গ্রামবাসীদের সচেতন করতে পরিকল্পনা নিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। তারা নতুন বছরের শুরুতেই এব্যাপারে পঞ্চায়েতভিত্তিক প্রচার অভিযানে নামবে।
মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, পরিবেশ দূষণ রুখতে প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্লাস্টিক জোগান দিতে না পারলে ইউনিটের উদ্দেশ্য মার খাবে। তাই এব্যাপারে ফের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে বৈঠক করা হবে। পাশাপাশি গ্রামবাসীরা যাতে যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক না ফেলেন সেজন্য সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানে নামা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে শিলিগুড়িতে নিষিদ্ধ প্ল্যাস্টিক। এবিষয়ে পুরসভা ও মহকুমা পরিষদ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েও প্লাস্টিকের কারবার বন্ধ হয়নি। চোরাপথে শহর ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে প্লাস্টিক। তাই সেই প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট করতেই ফাঁসিদেওয়ার ঘোষপুকুরে তৈরি করা হয়েছে ইউনিট। ১৯ নভেম্বর ঢাকঢোল পিটিয়ে সেই ইউনিটের উদ্বোধন করেন সভাধিপতি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ইউনিটে সেভাবে প্লাস্টিক নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। এখনও গ্রামীণ এলাকার রাস্তা, নিকাশি-নালা, ডোবায় ফেলা হচ্ছে প্লাস্টিক।
এনিয়ে ক্ষুব্ধ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, মহকুমা পরিষদ প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্টে উদ্যোগী হলেও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির হেলদোল নেই। তাই গ্রামীণ এলাকায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল সহ বিভিন্ন ধরনের পাত্র সংগ্রহে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। কাজেই প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, ঘোষপুকুরে ১০ কাঠা জমির উপর প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইউনিট চালু করা হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, দেড় কোটি টাকা খরচ করে তৈরি সংশ্লিষ্ট ইউনিটে একাধিক মেশিন বসানো হয়েছে। কোনও মেশিনে প্লাস্টিকের নোংরা পরিষ্কার করা হবে। আবার কোনও মেশিনে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক কুচি এবং কোনওটিতে আবার প্লাস্টিকের বোতল নষ্ট করে গোলাকার পিণ্ড তৈরি করা হবে। ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে দৈনিক এক টনেরও বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তা প্রক্রিয়াকরণ করা যাবে। পরবর্তীতে রাস্তা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে প্লাস্টিক কুচি।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে প্লাস্টিক সংগ্রহের বুথও তৈরি করা হয়েছে। অথচ, সেভাবে প্লাস্টিক সংগ্রহ হচ্ছে না। পঞ্চায়েতগুলিকে এবিষয়ে আরও উদ্যোগী হতে হবে। চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জনক সাহা অবশ্য বলেন, প্লাস্টিক সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়েছে। গ্রামে সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানও চলছে।