• সরকারি মেলা ভরসা দিচ্ছে নাড়াজোলের চিত্রকরদের
    বর্তমান | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: সোনাঝুড়ির হাট বা সুন্দরবনের টেরাকোটা তো ছিলই, হাওড়া ক্রিসমাস কার্নিভালে সব থেকে বেশি নজর কাড়ল পশ্চিম পটচিত্র। পশ্চিম মেদিনীপুরের নাড়াজোল থেকে এসেছিলেন পম্পা চিত্রকর ও তাঁর স্বামী রাজু চিত্রকর। গ্রামীণ শিল্পকর্মকে শহরে এনে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। রোজই ভালো টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে। জানালেন, সরকারি মেলাগুলি গ্রাম্য অর্থনৈতিক কাঠামোকে মজবুত করছে। আগামী বছরও মেলার অংশ হতে চান।

    পম্পাদেবী ছোটবেলায় পেন্সিলের সঙ্গেই তুলি হাতে নিয়েছিলেন। ধীরে সিদ্ধহস্ত হন। শুধু তাঁর পরিবারই নয়, নাড়াজোল গ্রাম পটচিত্রের সঙ্গে জড়িয়ে। স্বামী রাজু চিত্রকরের সঙ্গে ইতিমধ্যেই পিংলার পটচিত্র মেলা, কলকাতার সরস মেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি মেলায় গিয়ে পট বিক্রি করছেন বেশ কয়েক বছর ধরেই। পটচিত্রের গল্প গানের মাধ্যমে খদ্দেরদের শোনান। জেলার হয়ে বাংলাদেশে গিয়েও তুলে ধরেছিলেন বাংলার এই আদি শিল্পকে। হাওড়া ক্রিসমাস কার্নিভালে এ বছরই প্রথম এলেন। এসেই সাধারণ মানুষের ভিড় দেখে খুশি। বুধবার কার্নিভালের শেষদিন দুপুরে পটে তুলির টান দিচ্ছিলেন পম্পা। বললেন, ‘কত বিক্রি হবে আগে থেকে জানতাম না। তাই খুব বেশি সামগ্রী আনতে পারিনি। কয়েক দিনেই শাড়ি, চাদর, ওড়না সব বিক্রি হয়ে যায়। পটচিত্রের পাশাপাশি চায়ের কেটলি, ট্রে, পেনদানি ও ঘর সাজানোর সামগ্রীও কিনছেন প্রচুর মানুষ। এতটা চাহিদা হবে বুঝতে পারিনি।’ একদিনে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শিল্পদ্রব্য বিক্রি করেছেন তাঁরা। বছরের শেষ দিন প্রায় ২০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছে। এই চিত্রকর পরিবার তাঁদের গ্রামের একাধিক পরিবারকে এই কাজে যুক্ত করেছে। গ্রামের বাসিন্দাদের তৈরি সামগ্রী নিয়ে এসে বসেন সরকারি মেলাগুলিতে। রাজু চিত্রকর বলেন, ‘সরকারি মেলাগুলি গ্রামকে ভরসা জোগাচ্ছে। কলকাতা সহ জেলার মেলাগুলিতে ভালো বিক্রি হচ্ছে। না হলে গ্রামের বর্তমান প্রজন্ম পটচিত্রের কাজে এগিয়ে আসত না।’ মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই বললেন, ‘৫০ টাকা থেকে এখানে বিভিন্ন পটচিত্রের জিনিস মিলছে। প্রিয়জন কিংবা বন্ধুবান্ধবদের নতুন বছরে কিছু উপহার দেওয়ার জন্য এর থেকে ভালো জায়গা হতে পারে না।’
  • Link to this news (বর্তমান)