এর পরেও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে বেশ কয়েক দিন ধরে ট্রাম লাইন ঘিরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির যে কাজ চলছে, তাতে জল্পনা তৈরি হয়েছে। হাইকোর্টে গত শুনানিতে রাজ্য জানিয়েছিল, ময়দান থেকে খিদিরপুরের মধ্যে রুটটিতেই হেরিটেজ হিসেবে ট্রাম চালু রাখতে চায় রাজ্য। তবে আগে বন্ধ করা বেশ কয়েকটি রুটে সম্প্রতি অনিয়মিত ভাবে হলেও ট্রাম চলতেও শুরু করেছিল। তারই মধ্যে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ট্রাম লাইন দু’দিক থেকে টিন দিয়ে ঘিরে ঠিক কী কাজ চলছে, তা নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে। কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুরসভার তরফে বোর্ড দিয়ে ‘কাজ চলছে’ (ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস) বলেই শুধু জানানো হয়েছে।
কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে যে ভাবে ট্রাম লাইন ঘিরে খোঁড়াখঁুড়ি হচ্ছে, তাতে মানুষ আতঙ্কিত। এর আগে মুদিয়ালিতেও একই ভাবে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার পরে লাইন ঘিরে দীর্ঘদিন কাজ চলছিল। পুরসভা জানিয়েছিল, জলের লাইনের কাজ চলছে। সেই কাজ অন্তত ছ’মাস আগে শেষ হলেও আজ পর্যন্ত বালিগঞ্জ–টালিগঞ্জ রুটে ট্রাম চালু হয়নি। ফলে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও আদপে আর রুট চালু হবে কিনা, সংশয় তৈরি হয়েছে।’
এর আগে আলিপুর, কালীঘাট, বেলগাছিয়া–সহ বেশ কয়েকটি রুটের ট্রাম লাইন তুলে ফেলা হয়েছে। কোথাও লাইনের উপরে পিচ ঢেলে রাস্তা চওড়া করা হয়েছে। যা নিয়ে প্রবল ক্ষোভপ্রকাশ করেছে হাইকোর্টও। ট্রাম তুলে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে দায়ের মামলার আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ীর বক্তব্য, ‘হাইকোর্ট কোনও ভাবেই চাইছে না শহর থেকে ট্রাম তুলে নেওয়া হোক। রাজ্যকে আধুনিক পরিকাঠামো ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন রূপে ট্রাম চালানোর পরামর্শ দিয়েছে আদালত। তার পরেও এই ভাবে ট্রাম লাইন ঘিরে খোঁড়াখুঁড়ির পরে লাইনের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে ট্রাম সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে।’ সেখানেই এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
পুরসভার অবশ্য দাবি, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে মাটির নীচে জলের পাইপলাইনে কাজ চলছে। সেই কাজ হয়ে গেলে ফের রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। যদিও মুদিয়ালির অভিজ্ঞতায় সিঁদুরে মেঘই দেখছেন ট্রামপ্রেমীরা।