প্রাইমারিতে ক্লাস ওয়ান থেকেই সেমেস্টার চালুর ঘোষণা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁকে না জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনিক বৈঠকে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক প্রশ্নে কার্যত অসহায় দেখায় শিক্ষামন্ত্রীকে। তিনি এই বিষয়ে কিছু বলার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাক্যবাণের মুখে পড়েন। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়া নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি জানিয়ে দেন প্রাইমারিতে সেমেস্টার চালু হচ্ছে না।
কয়েকদিন আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রাইমারিতে সেমেস্টার চালু হবে। সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখেই সেমেস্টার সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্লাস ওয়ান থেকেই সেমেস্টার সিস্টেম চালু হয়ে যাবে। প্রতি ক্লাসে বছরে ২টি পরীক্ষা হবে। জুন মাসে প্রথম পরীক্ষা হবে। এরপর জুলাই থেকে নতুন সেমেস্টার। ডিসেম্বরে আবার পরীক্ষা। এরপর আবার জুন পর্যন্ত আরও এক সেমেস্টার।
বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে এনিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রায় তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, 'আমি কাগজে দেখলাম প্রাথমিকে নাকি সেমেস্টার চালু হচ্ছে। আমি জানতাম না। মুখ্যসচিবকে জিজ্ঞাসা করলাম, সেও জানে না বললেন। ব্রাত্য তুমি শিক্ষামন্ত্রী, নতুন কোনও পলিসি চালু করার সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করো।' এরপর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'দিদি, আমি কাগজে দেখেই মুখ্যসচিবের কাছে পাঠিয়েছি। আপনি অনুমতি দিলে তবেই নোটিফিকেশন হবে।'
তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধমকের সুরে বলেন, 'তাহলে আগে কাগজে বেরোল কী করে? আমি কোনও কথা শুনতে চাই না। পাবলিক তো আগেই জেনে গেল। যা মেসেজ যাওয়ার চলে গেল। ওটা চালু হবে না। চারজন পরমর্শদাতা সিদ্ধান্ত নিয়ে বলে দিল আর হয়ে গেল। আমি চাই বাচ্চাগুলোর ভার কমাতে, কাঁধের বোঝা কমাতে। আমরা যদি ওদের ভার বাড়িয়ে দিই, এমনিতেই পড়াশোনার ভার খুব বেশি এখন। ওইটুকু বাচ্চারা কথা বলতেই পারে না। টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল লিটিল স্টার বলতে পারে না। তাদের নাকি সেমেস্টার করবে। একটা ওয়ানের বাচ্চা কি সেমেস্টার দেবে? কলেজে যেটা চলে স্কুলে সেটা চলে না। স্কুল যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে। মানুষের কাছে যে বার্তা গেছে, ওরা সত্যি মনে করে। প্রেসকে একটা খাইয়ে দিলাম। এখন নিয়ম হয়েছে নিউজ খাইয়ে দেয়। প্রেসকেও বলব এই বিষয়ে সতর্ক হয়ে খবর করার।'