• ‘প্রাথমিকে সেমেস্টার চলবে না,’ প্রশাসনিক বৈঠকে মমতার তোপের মুখে ব্রাত্য
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
  • প্রাথমিকে কোনও সেমেস্টার চলবে না। একেবারে স্পষ্ট করে বলে দিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। এমনকী বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনিও নানাভাবে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে মুখ্য়মন্ত্রী রীতিমতো ধমকের সুরে জানিয়ে দেন, প্রাথমিকে কোনও সেমেস্টার প্রথা চলবে না। 

    বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, কোনও নীতি চালু করতে গেলে আমাদের জানাতে হয়। এদিকে ব্রাত্য বসু বলেন, পরশুদিন রাতে চিফ সেক্রেটারিকে বলেছি। আপনি সম্মতি দিলে তারপর হবে। 

    এরপরই মমতা বলেন, তাহলে কাগজে কীভাবে বের হল? 

    ‘আমি কোনও কথা শুনতে চাই না। পাবলিক তো আগে জেনে গেল। এটা হবে না। চারজন অ্যাডভাইজার সিদ্ধান্ত নিয়ে বলে দিল, আর হয়ে গেল, বাচ্চাগুলোর ভার কমাতে হবে, তাদের ব্যাগে ভার কমাতে। আর ওদের যদি আমরা ভার বাড়িয়ে দিই। এমনিতেই পড়াশোনার ভার বেশি। ওই টুকু বাচ্চা কথা বলতে পারে না। টুইঙ্কিল টুইঙ্কিল লিটল স্টার বলতে পারে না। তাদের আবার সেমেস্টার। একটা ওয়ানের বাচ্চা কি সেমেস্টার দেবে? টু এর বাচ্চা কি সেমেস্টার দেবে? কলেজে যেটা চলে সেটা স্কুলে চলে না। স্কুলে এগুলো হয় না। স্কুলে যা প্রথা চলছে সেটা চলবে। এডুকেশনের ব্যাপারে কোথাও কোনও পলিসি নিলে আমাদের জানাতে হবে তারপর সংবাদমাধ্যমে।’ 

    এদিকে মুখ্য়মন্ত্রী এদিন কার্যত জানিয়ে দেন, তাঁকে ও মুখ্য়সচিবকে অন্ধকারে রেখেই এসব করা হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন প্রাথমিকে সেমেস্টার প্রথা আনার মতো পদক্ষেপ অথচ মুখ্য়মন্ত্রীকে না জানিয়ে পদক্ষেপ! এটা কেমন কথা!

    এদিকে মুখ্য়মন্ত্রীর এদিন রীতিমতো ধমক দেন এনিয়ে। তবে এরপরই শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকে জানিয়ে দেন, সেমেস্টার থাকবে না। 

     সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান গৌতম পাল সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় চালু হচ্ছে সেমেস্টার পদ্ধতি। 

     সেক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, এবার থেকে একই শ্রেণিতে দুবার করে হবে পরীক্ষা। সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রতিযোগিতার জন্য ছোট থেকেই গড়ে তোলা হবে পড়ুয়াদের। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই তাই চালু হচ্ছে নতুন পদ্ধতি।

    জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত একটি সেমেস্টার এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দ্বিতীয় সেমেস্টার হবে। সেই সময় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল,  ২০০৯ সালের রাইট টু এডুকেশন আইন অনুসারে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ‘নো ডিটেনশন’ পলিসি আছে। আর প্রাক প্রাথমিকে ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক আনা হবে না। প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে গোটা শিক্ষাবর্ষে ৮০০ ঘণ্টা পার করতে হবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে গোটা শিক্ষাবর্ষে ১০০০ ঘণ্টা পার করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে সিঙ্গল সেমেস্টারে ৩৭৬ ঘণ্টা করে ও তৃতীয় থেকে পঞ্চম সিঙ্গল সেমেস্টারে ৪৬০ ঘণ্টা কাটাতে হবে। লিখিত পরীক্ষা ৬০ ঘণ্টার হবে। মার্কসের সঙ্গে ক্রেডিট পয়েন্ট দেওয়া হবে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)