রাজ্যে জাল পাসপোর্ট চক্রের রমরমা নিয়ে সমালোচনার মুখে সাংবাদিক বৈঠক করে তার দায় কার্যত ঝেড়ে ফেলেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। অথচ পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব পুলিশের যে দফতরের বিরুদ্ধে, সেই DIB আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ বৃহস্পতিবার কার্যত স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে DIBতে বড়সড় রদবদলের নির্দেশ দিলেন তিনি। প্রকাশ্য বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যে ফের একবার মুখ পুড়ল রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের।
পাসপোর্ট হোক বা সরকারি চাকরি, পুলিশ ভেরিফিকেশনে ঘুষ দিতে হয়নি রাজ্যে এমন সৌভাগ্যবান খুঁজে পাওয়া ভার। সম্প্রতি রাজ্যে জাল পাসপোর্ট চক্রের রমরমা ধরা পড়ার পর সেই DIBর বিরুদ্ধেই টাকা নিয়ে বাংলাদেশিদের ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগে সরব হয় বিরোধীরা। লাগাতার সমালোচনার মুখে গত রবিবার ছুটির দিন সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। সেখানে তিনি দাবি করেন, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে তেমন কিছু করার নেই পুলিশের। তিনি বলেন, পাসপোর্ট দফতর থেকে তাদের নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, পুলিশ কোনও আবেদনকারীর পরিচয়, ঠিকানা বা নথি যাচাই করতে পারবে না। ফলে কেউ ভুয়ো নথি জমা দিলেও পুলিশের তাতে কিছু করার থাকে না।
বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রকাশ্য প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের অভিযোগে কার্যত শিলমোহর দিয়ে বলেন, ‘রাজীব, ডিআইবির বিরুদ্ধে তোমাকে একটা কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। একটা ইনফরমেশন তারা রাখে না। একটা ইনফরমেশন দেয় না। তারা পোস্টটাকে নিয়ে খেলা করে। আমি বাস্তব খেলার কথা বলছি না, অবাস্তব খেলা, অনৈতিক খেলা। এগুলোকে চেঞ্জ করে দেও।’
এমনকী রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে লবিবাজির অভিযোগ তোলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘যারা সত্যি কাজ করে, অনেক সৎ পুলিশ অফিসার আছে যারা খেটে খায়, তাদের দিকে তোমরা নজর দেও না। লবি চলে, লবি। এই লোকটা আমার বন্ধু, একে প্রোমশন দিতে হবে। কেন? কীসের জন্য? যে কাজের লোক হবে তাকে দিতে হবে। যে কাজের লোক না হবে, কোনও লবি চলবে না। লবি একটাই, লবি হল মানুষের।’