শেয়ারে লগ্নির নামে দেশের ৩০০ জনের কাছে ৬৫ কোটির প্রতারণা, ধৃত বারাসতের যুবক
হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ জানুয়ারি ২০২৫
এক বা দু’কোটি নয় একেবারে ৬৫ কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা। একটি সাইবার জালিয়াতির মামলায় লালবাজারের গোয়েন্দারা উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে তন্ময় পাল নামে এক যুবক গ্রেফতার করেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় পোর্টাল খতিয়ে দেখে এমনই তথ্য জানতে পেরেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সারা দেশের অন্তত ৩০০ জনের কাছ থেকে সে প্রতারণা করেছে। এখন এই যুবকের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত শেয়ারে লগ্নির নাম করে সারা দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকে এই পরিমাণ টাকা হাতিয়েছিল তন্ময় পাল। আর এই বিপুল প্রতারণার কারবার খুলে বসেছিল বারাসতের নিজের বাড়িতেই। এখন এই বিপুল টাকা সে কীভাবে সরিয়েছে? তদন্তকারীরা তা জানার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে দেশের অন্যান্য শহর ও রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অন্য রাজ্যেও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাই সেক্ষেত্রে অন্য রাজ্য বা শহরের পুলিশ তন্ময়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান লালবাজারের আধিকারিকরা।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, তন্ময় যে ৬৫ কোটি টাকার প্রতারণা করেছে তা গোয়েন্দারা জানতে পারেন,সারা দেশজুড়ে কাজ করা জেসিসিটি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বা জেএমাইএস পোর্টাল থেকে। প্রত্যেকটি শহর ও রাজ্যের পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা এই পোর্টাল অ্যাক্সেস করতে পারেন। সাধারণত কোনও সাইবার অপরাধী পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি সে ব্যবহার করেছে সেগুলির উপর নজর রাখা হয় এই পোর্টালের মাধ্যমে। এই পোর্টালে অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সার্চ করলেই ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে টাকা রোজগারের টোপ দিয়ে শেয়ারে লগ্নি করার প্রলোভন দিত তন্ময়। আর এভাবেই সারা দেশের অন্তত ৩০০ ব্যক্তিকে সে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছিল। যার মধ্যে একজনের কাছ থেকে সে ২০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। দিল্লি, মুম্বই, পাটনা, বেঙ্গালুরু শহরের মানুষ তার প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছিল। শুধু তাই নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য গড়ে তুলতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সেবি, ইউএস সিকিউরিটি, এক্সচেঞ্জ কমিশনের ভুয়ো লোগো ব্যবহার করত সে।
প্রথমদিকে, বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা ফেরত দিত তন্ময়। আর তারপরেই আরও টাকা উপার্জনের লোভে তারা আরও বেশি অর্থ লগ্নি করত। তখন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বন্ধ করে দিত তন্ময়। কলকাতার এক বাসিন্দা এভাবে ৬৩ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৪৬ টাকা খুইয়েছেন। পরে তিনি কলকাতা পুলিশের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই পরেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।