দলের জন্মলগ্নের যোদ্ধা। দলের অভ্যন্তরে একঘরে হলেও কর্তব্য পালন করে গিয়েছেন। যুব সংগঠনের সভাপতি থেকে দলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। বর্তমানে তিনি দলের সহ-সভাপতি ও কাউন্সিলর। জেলার প্রথম সারির সেই নেতাকেই খুন হতে হলো দুষ্কৃতীদের হাতে। কে এই দুলালচন্দ্র সরকার? কী ভাবে মালদায় উত্থান তাঁর?
ছাত্র বয়সেই রাজনীতিতে যোগদান। ১৯৯৫ সালে কংগ্রেসের টিকিটে প্রথম কাউন্সিলর হন। সামাজিক কাজকর্মের জন্যে পরিচিতি বাড়তে থাকে এলাকায়। ভরা বাম জমানায় মালদায় তখন ‘গণি-যুগ’ চলছে। কংগ্রেসি ঘরানাতেই পরিপক্ক হতে থাকে দুলাল ওরফে বাবলার রাজনীতি।
১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন দল তৈরির সময় নেত্রীর ডাকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। শুরু থেকেই নেত্রীর আস্থাভাজন ছিলেন বাবলা। সেই থেকে একটানা কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০০ সাল থেকে পরপর পাঁচবার ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০০১ সালে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দায়িত্ব পান বাবলা সরকার। ২০০৫ সাল পর্যন্ত জেলা সভাপতি ছিলেন তিনি।
২০০৭ সালে বাবলাকে একই ভাবে বাড়ির সামনেই দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টা করে। সেই সময়ে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন তিনি। কিন্তু এ বার আর শেষ রক্ষা হলো না। তিন বছর আগে তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী তুলে নেয় জেলা পুলিশ। তারপর থেকে মনে মনে একটা অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল বাবলার।
২১-এর বিধানসভার আগে কিছুটা বেসুরো হতে দেখা গিয়েছিল বাবলাকে। দলে ‘সেকেন্ডম্যান’ করে রাখা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। যদিও, দল ও নেত্রীর প্রতি বরাবরই আনুগত্য প্রকাশ্য করে গিয়েছেন বাবলা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তৃণমূল কাউন্সিলরকে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বিহারের বাসিন্দা এবং অন্য জন মালদার ইংরেজবাজারের বাসিন্দা বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সম্ভব জৈন।