নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: অ্যাকশন মুডে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। ভরাট হওয়া পুকুর থেকে মাটি তোলার কাজ শুরু হল। বৃহস্পতিবার আঁকরবাগানে একটি জলাশয় থেকে মাটি তোলা হয়। গোদা এলাকার ভরাট হওয়া জলাশয় আবার আগের অবস্থায় ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, কোনও জলাশয় ভরাট করা যাবে না। যেসব পুকুরগুলি ভরাট করা হয়েছে সেগুলি আবার আগের অবস্থায় ফেরাতে হবে। যারা এই কাজ করেছে তাদেরই মাটি তুলতে হবে। তা নাহলে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বর্ধমানের পাশাপাশি মেমারি শহরেও অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। বেশকিছু জলাশয় এই এলাকাতেও ভরাট হয়েছে। একশ্রেণির প্রভাবশালীদের মদতেই অবৈধ এই কাজ চলছে বলে অভিযোগ। যেসব এলাকায় জলাশয় ভরাট হয়েছে, সেগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারি আধিকারিকরা এলাকায় গিয়ে ভরাটকারীদের কড়া বার্তা দিচ্ছেন। এছাড়া সরকারি জমি যারা বিক্রি করছে তাদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে। যারা এসব কাজে যুক্ত রয়েছে, তাদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
শহরের বাসিন্দারা বলেন, বর্ধমান শহরে কয়েকটি জলাশয় ভরাট হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলি চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নেওয়া হোক। বাঁকার পাড়ও জবরদখল হয়ে গিয়েছে। কাদের মদতে জবরদখলকারীরা সেখানে রয়েছে সেগুলিও চিহ্নিত করা হোক। এক আধিকারিক বলেন, বর্ধমান শহর সংলগ্ন এলাকায় জবরদখলকারীদের দৌরাত্ম্য রয়েছে। খাসজমি মাফিয়ারা প্লট করে বিক্রি শুরু করেছে। সেই এলাকাগুলিতে সরকারি বোর্ড লাগানো হবে। তারপর কেউ তা দখল করলে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।
সম্প্রতি বর্ধমান পুরসভায় আট থকে ১০টি পুকুর ভরাটের অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগপত্রগুলি জেলাশাসকের দপ্তরে যাওয়ার পরই অ্যাকশন শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশকিছু ক্ষেত্রে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কয়েকটি এলাকায় তারা অবৈধ নির্মাণ বা পুকুর ভরাট কিছুদিনের জন্য বন্ধ করেছিল। কিন্তু কয়েকদিন পরই আবার কাজ শুরু হয়ে যায়। কড়া পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্যই শহরের জলাশয়ের সংখ্যা কমে যায়।
বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, অবৈধভাবে পুকুর ভরাটের অভিযোগে একাধিক এফআইআর করা হয়েছিল। তারপরও একাংশ পুকুর ভরাটের চেষ্টা করে। অবৈধ নির্মাণকারীদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। যারা নিয়ম না মেনে নির্মাণ করছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর জেলা প্রশাসনও অবৈধ কাজ বন্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আপাতত ভরাট হওয়া পুকুর আগের অবস্থায় ফেরানোর অ্যাকশন শুরু করেছে।