নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পিকনিক পার্টির দাপটে দূষণে জেরবার তিস্তাপাড়। জলপাইগুড়ি শহরে তিস্তার এক নম্বর থেকে চার নম্বর স্পার পর্যন্ত থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের গ্লাস ও মদের বোতলের ছড়াছড়ি। যার জেরে দৃশ্যদূষণ তো বটেই, পরিবেশ দূষণও ঘটছে। তিস্তাপাড়ের এই হাল দেখে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শহরের পরিবেশপ্রেমীদের পাশাপাশি বাইরে থেকে ঘুরতে আসা মানুষ।
শীত পড়তেই তিস্তার চরে শুরু হয়ে গিয়েছে পিকনিক। বড়দিন কিংবা বর্ষবরণের দিন পিকনিক করতে আসা মানুষের এতটাই ভিড় ছিল যে, তিস্তার চরে কার্যত পা রাখার জায়গা পাওয়া মুশকিলের হয়ে দাঁড়ায়। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, পিকনিকের দল আসছে, তিস্তারপাড়ে হইহুল্লোড়, খাওয়াদাওয়া করে চলে যাচ্ছে। থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের গ্লাসের মতো সামগ্রী দেদার ব্যবহার হলেও দেখার বা বলার কেউ নেই। ফলে পিকনিক শেষে সেসব তিস্তার পাড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রেখে চলে যাচ্ছেন সবাই। কেউ কেউ আবার নদীতেও ফেলছেন। যেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে তিস্তার চরে এখন হাঁটার মতো পরিস্থিতি নেই। গোটা এলাকা চরম দৃশ্যদূষণের শিকার। সঙ্গে পরিবেশ দূষণও ঘটছে।
অভিযোগ, তিস্তাপাড়ের পরিবেশরক্ষায় জলপাইগুড়ি পুরসভা কিংবা শহর লাগোয়া খড়িয়া পঞ্চায়েত কারও মাথাব্যথা নেই। গোটা নদীর চর কাচের বোতল, থার্মোকল ও প্লাস্টিকের থালা-গ্লাসে ভরে গেলেও দেখেও না দেখার ভান করে বসে রয়েছে তারা। এনিয়ে খড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনোজ ঘোষের বক্তব্য, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে নদীর চরে কত ডাস্টবিন দেওয়া সম্ভব? যারা পিকনিক করতে আসছে, তাদেরও সচেতন হওয়া দরকার। কেউ কেউ খাওয়াদাওয়ার পর নদীতে থালা-গ্লাস ফেলে চলে যাচ্ছে, এটা ঠিক নয়। পঞ্চায়েতের তরফে যতটা সম্ভব নজরদারি চালানোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে, তিস্তার চরে যারা পিকনিক করতে আসছেন তাদের বক্তব্য, খাওয়াদাওয়ার পর এঁটো থালা-গ্লাস কোথায় ফেলব? কোনও ডাস্টবিনের ব্যবস্থা নেই। এত মানুষ শীতকালজুড়ে তিস্তার চরে পিকনিক করেন, অথচ পানীয় জল কিংবা শৌচালয়েরও কোনও ব্যবস্থা নেই এখানে। পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পালের বক্তব্য, নদীর চরে পিকনিকের জন্য পানীয় জল ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়।
খড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বক্তব্য, পিকনিকের মরশুমে আমরা তিস্তার চরে কয়েকটি অস্থায়ী শৌচালয় তৈরি করে দিতে বলেছি এজেন্সিকে। কেন হয়নি খোঁজ নেব। নিজস্ব চিত্র।