ব্যবসায়িক শত্রুতা নাকি অন্য ষড়যন্ত্র? বাবলা খুনের মোটিভ নিয়ে ধন্দ
বর্তমান | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ: মালদহের হেভিওয়েট তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দুলাল সরকারের খুনের পিছনে কী মোটিভ রয়েছে, তা ভাবাচ্ছে পুলিস আধিকারিক থেকে মালদহের আমজনতাকে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি মালদহের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন দুলালবাবু ওরফে বাবলা। প্লাইউডের ব্যবসা ছিল তাঁর। এছাড়াও নির্মাণ শিল্পের সঙ্গেও বেশকিছুটা যোগ ছিল। ফলে ব্যবসায়িক লড়াই না অন্য কোনও ষড়যন্ত্রের জন্য খুন হতে হল এই জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে, তা নিয়ে চর্চার অন্ত নেই। পুলিস আধিকারিকরাও আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছেন রহস্যের জট খুলতে।
এক সময় বরকত গনিখান চৌধুরীর হাত ধরে রাজনীতির আঙিনায় পা রাখা বাবলা সরকার নয়ের দশক থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী হয়ে ওঠেন। মমতা তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করার দিনই কংগ্রেস ছেড়ে দলের পতাকা ধরেন তিনি। দলনেত্র্রীর প্রতি আস্থায় অবিচল বাবলা এক সময় জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন বেশ কিছুদিন।
তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কঠোর সমালোচক বাবলার সঙ্গে কংগ্রেস, বিজেপি বা সিপিএম নেতৃত্বের ব্যক্তিগত বৈরিতা কখনই তৈরি হয়নি। নিজের দলের অন্দরেও বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতানেত্রীদের সঙ্গেও তাঁর সখ্যতা ছিল চোখে পড়ার মতোই।
অন্যদিকে নিজের ব্যবসার দিকেও মনোযোগ দেন তিনি। প্লাইউডের ব্যবসার সঙ্গে তিনি যুক্ত অনেকদিন। পাশাপাশি আবাসন নির্মাণ ব্যবসাতেও কিছু ক্ষেত্রে তাঁর অংশীদারিত্ব ছিল বলে ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে তাঁর সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মতো। একই সঙ্গে বেশকিছু অরাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বাবলা। সামাজিক কর্মকাণ্ডে কেউ তাঁর কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলে কখনও ফেরাতেন না। প্রকাশ্যে ও পরোক্ষে নিয়মিত আর্থিক সাহায্য করে গিয়েছেন চেনা, অচেনা অনেক মানুষকে। কিন্তু তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্য কি ঈর্ষান্বিত করেছিল কোনও মহলকে? সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তদন্তকারী থেকে মালদহের আমজনতাকে।
রাজনৈতিকভাবে দুলাল সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক তথা ইংলিশবাজার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন, বাবলার কোনও শত্রু ছিল বলে কখনও শুনিনি। কিন্তু কারা নৃশংসভাবে তাঁকে খুন করল, তা দ্রুত খুঁজে বের করতে হবে পুলিসকে।
ইংলিশবাজার পুরসভার তরুণ কাউন্সিলর গৌতম দাস, উদয় চৌধুরী, প্রসেনজিৎ ঘোষ প্রমুখ বলেন, বাবলাদা ছিলেন আমাদের অভিভাবক। যে কারণে তাঁকে খুন করা হয়ে থাকুক, তা দ্রুত প্রকাশ্যে আসুক।
মালদহ শহরের ঝলঝলিয়া এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন,এই তৃণমূল নেতাকে কোন কায়েমি স্বার্থে খুন করা হল, আমরা সেটা জানতে চাই। খুনের নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে সামনে আনা হোক।
জেলা পুলিসের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, আমরা সব সম্ভাবনাই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। রহস্যের জট দ্রুত খুলবে। এই তো সেদিনের কথা। ইংলিশবাজারে কার্নিভালে বাবলা। - ফাইল চিত্র।