‘বাবলাদা’ নেই! বিশ্বাসই হচ্ছে না মালদহবাসীর, জেলায় কি ফিরল গ্যাংওয়ার আতঙ্ক? চিন্তায় বাসিন্দারা
বর্তমান | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: সতেরো বছর পর ফের রাজনৈতিক নেতা খুনের ঘটনা দেখল মালদহ। প্রকাশ্য দিবালোকে শাসক দলের নেতাকে খুন হতে দেখে আতঙ্কিত শহরবাসী। তাঁদের অনেকে মনে করছেন, ফের হয়তো ফিরে এসেছে আগের সেই হাড়হিম করা রক্তক্ষয়ী গ্যাংওয়ার। ২০০৮ সালে ইংলিশবাজারে পরপর দু’দিন দুই নেতার ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। প্রথম দিন আততায়ীরা বাবলা সরকারকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কিন্তু সেবার কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন তিনি। এই ঘটনার ঠিক পরদিন রাতের অন্ধকারে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে ইংলিশবাজার পুরসভার তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান এবং তৃণমূল নেতা বিশ্বনাথ গুহকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। তারপর সতেরো বছর আর কোনও রাজনৈতিক নেতা খুনের ঘটনা ঘটেনি এখানে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের কথায়, ২০০৮ সালে বিশ্বনাথ গুহকে রাতের অন্ধকারে খুন করা হয়। বৃহস্পতিবার বাবলা সরকারের মতো একজন পরিচিত রাজনৈতিক নেতাকে দুষ্কৃতীরা এভাবে দিনের আলোয় খুন করে পালিয়ে গেল, এটা পুলিসের চরম ব্যর্থতা। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে বাবলা পার্টিটা করতেন। তিনি কোনও দলবদলু নেতা ছিলেন না। অবিলম্বে পুলিসকে খুনিদের খুঁজে বের করতে হবে। শাসক দলের নেতার নিরাপত্তা নেই দেখে মালদহ শহরে যে একটা চাপা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
১৯৮০ সালে সিপিএম নেতা কুলদীপ মিশ্রকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল। তিনিও ঝলঝলিয়া এলাকাতেই খুন হয়েছিলেন। প্রায় একই জায়গায় এদিন খুন হন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। কুলদীপ সেই সময় সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ অনুমোদিত রেলওয়ে হকার্স ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। জেলা কংগ্রেসের কার্যকারী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, এর আগে দুই রাজনৈতিক নেতা রাতের অন্ধকারে খুন হয়েছিলেন। এই প্রথম প্রকাশ্য দিবালোকে কোনও শাসক দলের নেতা খুন হলেন। এই ঘটনায় অবশ্যই শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চাঁচলের তৃণমূল বিধায়ক নীহার রঞ্জন ঘোষ বলেন, ২০০৮ সালের বিশ্বনাথ গুহের খুনের পর জেলায় ফের কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যু হল।
এদিনের হাড়হিম করা ঘটনার পর বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি ঘোষের মন্তব্য, অরাজকতা সৃষ্টি হলে তখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে। তার জন্য একমাত্র দায়ী পুলিস ও প্রশাসন। শহরের নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এবং এই অস্থিরতার জন্য দায়ী শুধুমাত্র অকর্মণ্য পুলিস।