রাজীব বর্মন, দেওয়ানহাট: ছিটমহল বিনিময়ের ফলে এদেশে এসে ভারতীয় নাগরিক হয়েছেন। কাজের জন্য পরিবার নিয়ে দিল্লিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার পুলিসের হয়রানির জেরে তাঁরা ফের পরিবার নিয়ে দিনহাটায় ফিরতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিক আবু তাহের গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন। তিন কন্যা সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দিল্লি পুলিসের হাতে হেনস্তার আশঙ্কায় ভয়ে আতঙ্কে কার্যত পালিয়ে আসতে হয়েছে, দাবি আবুর। দিল্লিতে থাকা পরিযায়ী শ্রমিক মহল্লায় গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলাদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিনহাটায় ফিরলেও পরিবরটির মুখে চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ।
২০১৫ সালে ৩১ জুলাই দীর্ঘ ৬৪ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়। ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের ৫১টি এবং বাংলাদেশের ভিতরে ভারতের ১১১টি ছিটমহল বিনিময় হয়। ছিটমহল বিনিময়ের সময়ই বাংলাদেশের ভিতরে থাকা ছোট গাড়লঝোড়া ছিটের বাসিন্দা আবু তাহের স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডে চলে আসেন। কিন্তু তাঁর বাবা, মা সহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বাংলাদেশেই থেকে যান। এদেশে এসে তাঁর ঠিকানা হয় দিনহাটার অস্থায়ী ক্যাম্পে। পরবর্তীতে তাঁদের সেটেলমেন্ট ক্যাম্পে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করে পরিবারটি। কিন্তু বিগত চার বছর ধরে কাজের সূত্রে দিল্লির রাজাপুরীতে থাকতেন তাঁরা। সেখানে ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন আবু তাহের।
সম্প্রতি, দিল্লি পুলিসের একটি দল তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে পরিচয় প্রমাণ দেখাতে বলে। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সহ অন্যান্য নথি দেখান। কিন্তু তাঁদের বাবা সহ পূর্ব পুরুষের নথি দেখতে চেয়ে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ আবু তাহেরের। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, পূর্বপুরুষের নথি কোথা থেকে দেখাব? আমি পুলিসকে আমার ভোটার এবং আধার কার্ড দেখিয়েছিলাম। তারা আমার বাবা ও পূর্বপুরুষের নথি দেখতে চায়। আমার কাছে সেই নথি নেই। আমি ২০১৫ সালে বাংলাদেশে থাকা একটি ভারতীয় ছিটমহল থেকে ভারতে এসেছি। সেটা তারা বুঝছে না। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের কথা দিল্লি পুলিস জানে না বলছে। তাই পুলিস যদি ধরে জেলে ভরে সেই ভয়ে দিনহাটার বাড়িতে ফিরেছি।
আবু তাহেরের প্রতিবেশী দিনহাটা সেটেলমেন্ট ক্যাম্পের বাসিন্দা আতুর রহমান বলেন, ওরা আমার প্রতিবেশী। আমি দাসিয়ারছাড়া ছিটমহলের বাসিন্দা ছিলাম। আমরা বৈধ ভারতীয় নাগরিক হলেও সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।