• শিলিগুড়ির উত্তরায়ণে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যু
    বর্তমান | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার উত্তরায়ণের এক বাংলো বাড়িতে রহস্যমৃত্যু মা ও ছেলের। পুলিস জানিয়েছে, মৃত মায়ের নাম তিথি দাস (৩৮) ও ছেলের নাম তেজস দাস (৮)। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরায়ণের ই-৯ ব্লকে। ঘটনার খবর শুনে স্বামী সুজিত কুমার দাস এবং মেয়ে তেজল দাস দু’জনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনার জেরে এই অভিজাত এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মা ও ছেলের দেহ এদিনই ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

    মহিলার স্বামী সুজিতবাবু একাধিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তিনি ঘটনার রাতে বাইরে ছিলেন। দাস দম্পতির বড় মেয়ে বেঙ্গালুরুতে পড়াশোনা করেন। নতুন বছরকে একসঙ্গে স্বাগত জানাতে তিনি শিলিগুড়ি এসেছেন। এদিনই তাঁর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। বাংলোতে দীর্ঘদিন ধরে পরিচারিকার কাজ করেন সুমন্তী মুন্ডা ও সুমিত্রা বিশ্বাস। তাঁরা জানিয়েছেন, বাড়িতে তিথিদেবীর দিদির ছেলেও থাকেন। বর্ষবরণের রাতে ও নববর্ষ, দু’দিনই বাড়িতে পার্টির আয়োজন ছিল। বাংলোর ছাদে রান্না করে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। বাড়ির লোকেদের পাশাপাশি বাইরের কয়েকজনও পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘরে চলে যান সুমিত্রাদেবী। তখনও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। 

    জানা গিয়েছে,ঠান্ডা থেকে বাঁচতে রুম হিটার চালানোর পাশাপাশি চারকোলও জ্বালাতেন তিথিদেবী। রাতে পার্টি শেষে তিনি ছেলেকে নিয়ে ঘরে চলে যান। সঙ্গে চারকোল নিয়ে গিয়েছিলেন। এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মেয়ে মাকে ডাকাডাকি করেও কোনও উত্তর পাননি। এরপর পাশের ঘরে গিয়ে মাসতুতো দাদা তন্ময়কে ডেকে তুলে দু’জনে মিলে দরজা ভেঙে ঢোকার পর দেখতে পান ভাইয়ের দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে। পাশেই নীচে পড়ে রয়েছেন তিথিদেবী। এরপরেই তাঁকে তুলে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে জল দিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। এরপর প্রতিবেশীদের ডেকে দু’জনকে নার্সিংহোম নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

    বাড়ির পরিচারিকারা জানান,ঘরের ভিতরে অনেক মদের বোতল ছিল। শৌচাগারে একটি বালিশ ছিল। ঘরের সমস্ত জিনিস লণ্ডভণ্ড অবস্থায় ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিচারিকা, বাড়ির সদস্য থেকে শুরু করে প্রতিবেশীদের জেরা করে ঘটনার পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)