• জ্যোতিপ্রিয়র টাকা কি রেশন দুর্নীতির? প্রশ্ন আদালতের
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা আদৌ রেশন দুর্নীতির কি না, তা নিয়েও এ বার প্রশ্ন উঠল আদালতে। ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মেনে নিলাম তাঁর (জ্যোতিপ্রিয়র) আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে, তিনটি কোম্পানিতে টাকা ঢুকেছে। সেই টাকা বাকিবুরের থেকে এসেছে। কিন্তু এটা অন্য দুর্নীতির টাকাও তো হতে পারে। রেশন দুর্নীতির টাকা কী ভাবে পেলেন?’ ইডির তরফে জবাব দেওয়া হয়, ‘দুর্নীতির তদন্তে গঙ্গোত্রী থেকে গঙ্গাসাগর নয়, গঙ্গাসাগর থেকে গঙ্গোত্রী পৌঁছনোর চেষ্টা করতে গিয়ে দেখা গেল আসলে সেটা বিরাট পর্বত। আরাবল্লী নয়, হিমালয়।’

    রেশন দুর্নীতির মামলায় দেড় বছর ধরে তদন্ত করছে ইডি। এদিন জ্যোতিপ্রিয়র জামিনের শুনানিতে বিচারক বলেন, ‘নদিয়ার যে এফআইআরের ভিত্তিতে আপনারা তদন্ত শুরু করেছিলেন তা ছিল একটা চুরির মামলা। সেটা দুর্নীতি কেন বলছেন? যদি দুর্নীতি হয়, আজ পর্যন্ত কোনও সরকারি অফিসারকে কেন অভিযুক্ত করা হয়নি? কেউ আপনাদের কি এসে বলেছেন রেশনে সাপ্লাই কম হয়েছে? ডিস্ট্রিবিউটর যদি চুরি করে থাকেন, তাহলে মন্ত্রী কী ভাবে যুক্ত হলেন?’

    বিচারক আরও বলেন, ‘মেনে নিলাম তাঁর আত্মীয়দের অ্যাকাউন্ট এবং তিনটি কোম্পানিতে টাকা ঢুকেছে। সেই টাকা বাকিবুরের থেকে এসেছে। কিন্তু উনি (মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়) তো দুর্নীতি গ্রস্তও হতে পারেন। আপনারা রুটে গিয়ে তদন্ত করুন।’

    বিচারকের একাধিক প্রশ্নের উত্তরের ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন,‘চুরির তদন্ত করতে গিয়ে এই দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে। লাইসেন্স বিহীন দোকান থেকে রেশনের বস্তা পাওয়া গিয়েছে। অথচ বস্তা চুরির কোনও অভিযোগ হয়নি। রেশনে খাদ্যদ্রব্য শর্ট সাপ্লাই করা হতো। জ্যোতিপ্রিয় দুর্নীতির মাথায় রয়েছেন। ১০০ টা এফআইআর হয়েছে। কিন্তু সরকার সেই তথ্য দেয়নি ইডিকে।’

    রেশন দুর্নীতির মামলায় কিছুদিন আগে নতুন করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করায় ইডিকে বিচারকের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই মামলায় ধৃত সিএ শান্তনু ভট্টাচার্য,ব্যবসায়ী হিতেশ চন্দক এবং সুব্রত ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। সেই মামলাতেও বৃহস্পতিবার ইডির প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে আদালত। ইডি তরফে আরও ৫ দিন হেফাজতের আবেদন করা হয়। বিচারক কড়া ভাবে বলেন, ‘কেন আবার হেফাজতের প্রয়োজন? হেফাজত দেওয়া হয় তদন্তের প্রয়োজনে। খবর তৈরির জন্য নয়।’

  • Link to this news (এই সময়)