• বাংলার বাড়ির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মে মাসেই দিয়ে দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: গ্রামের গরিব মানুষের জন্যে রাজ্য সরকারের আবাস প্রকল্প বা ‘বাংলার বাড়ি’ তৈরির কাজ সময়মতো হলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মে মাসেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিতে চান। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে তিনি এ কথা ঘোষণা করেন। তবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার আগে জেনে নিতে চান, প্রথম কিস্তির টাকায় নির্মাণ শুরু হয়েছে কিনা, কাজ সময়মতো এগোচ্ছে কিনা।

    ডিসেম্বরেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ১২ লক্ষ গ্রামীণ গরিব মানুষকে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে প্রশাসনিক সভায় জেলা প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, ‘এই টাকাটা রাজ্য সরকার দিচ্ছে। দেখুন তো কাজ হচ্ছে কিনা? কাজ ঠিক মতো হলে মে মাসেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দিয়ে দেবো। কাজ শুরু করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হলে বিডিওরা সরসারি জেলাশাসকদের জানান। তিনি নিষ্পত্তি করবেন। দেখতে হবে রাজ্য সরকারের এই টাকার এক পয়সাও যেন অন্য কোনও খাতে খরচ না হয়।’

    ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ২৮ লক্ষ লোকের মধ্যে সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা ঠিক হয়েছে কিনা, আর এক বার দেখতে হবে। বাকি ১৬ লক্ষের তালিকা মিলিয়ে রাখতে হবে এখন থেকেই। এঁদের একটা অংশকে প্রথম কিস্তির টাকাও মে মাসের মধ্যে দেওয়া হবে। বাকিদের ডিসেম্বরের মধ্যে। মার্চের মধ্যে সবটা মেটানো হবে। এই টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনও অনিয়ম যে বরদাস্ত করা হবে না, তাও মুখ্যমন্ত্রী ফের বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের।

    ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের বিকল্প রাজ্য সরকারের ‘কর্মশ্রী’তে কাজের হিসেব রাখা হচ্ছে কিনা, সেটাও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। চার বছরের বেশি সময় ধরে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে না রাজ্যকে। এই শ্রমিকদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি, সেচ, পূর্ত দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজে সুযোগ করে দিতেই পঞ্চায়েত ও শ্রম দপ্তর যৌথ ভাবে ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্প চালু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঠিকাদারদের প্রথমেই বলে দিন, বাইরের লোকজনদের না নিয়ে ১০০ দিনের প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত স্থানীয়দের নিয়েই কাজ করাতে হবে।’

    বাংলা সহায়তা কেন্দ্রেগুলি মনিটরিংয়েও জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, প্রতি মাসে এই কেন্দ্রগুলির কাজকর্ম পর্যালোচনা করতে হবে। খোঁজ নিতে হবে, এই কেন্দ্রগুলি নিয়ে মানুষের কোনও অভিযোগ আছে কিনা। থাকলে তার সমাধান করতে হবে। রাজ্যে ৩,৫৬১টি বাংলা সহায়তাকেন্দ্র রয়েছে। যেখানে ৭ কোটি ৬২ লক্ষ মানুষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১৪ কোটি সরকারি পরিষেবা পেয়েছেন।

    মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, জানতে হবে, ৩০৪ ধরনের সরকারি পরিষেবা কি মানুষ পাচ্ছেন? বিভিন্ন প্রকল্পের ইনফর্মেশন এবং ফর্ম কি দেওয়া হচ্ছে? আপডেট করা হচ্ছে? আর কী কী পরিষেবা পেতে পারেন মানুষ, তার তালিকা কী দেওয়া রয়েছে এই সব কেন্দ্রে? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, প্রত্যেকটি সহায়তা কেন্দ্রে বাংলায় স্পষ্ট করে লিখতে হবে, সেখানে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে চা বাগানে বাংলার পাশাপাশি লিখতে হবে হিন্দিতেও।

  • Link to this news (এই সময়)