সন্ধে নামার আগে জনা ১৫ বাসিন্দা তিমিটিকে গড়িয়ে গড়িয়ে নদীর দিকে নিয়ে যান। গায়ে জল লাগতেই তিমিটি আবার নদীতে নেমে যায়। বনকর্মীদের অনুমান, অসুস্থ হওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে নদীর মোহনা ধরে চলে এসেছে তিমিটি। বৃহস্পতিবার সকালেও কাকদ্বীপের মধুসূদনপুরের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীর চরে উঠে পড়েছিল ওই তিমি। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা সেটিকে ঠেলে জলে নামানোর পরে চলে যায়।
প্রায় ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের এত বড় তিমি অতীতে কখনও মুড়িগঙ্গা নদীতে দেখা যায়নি। মুড়িগঙ্গায় এই বিশালাকৃতির তিমি এলো কোথা থেকে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দা সঞ্জীব সাগর বলেন, ‘এর আগে এই নদীতে কখনও তিমি মাছ দেখা যায়নি। ঘোড়ামারা দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম দিকের মুড়িগঙ্গার চরে তিমিটাকে প্রথম দেখা যায়। তিমিটিকে জ্যান্ত দেখে এলাকার লোকজন ঠেলে নদীর জলে নিয়ে যায়। জল পেতেই তিমিটা ঝটকা দিয়ে চলে যায়।’
নদীতে এত বড় তিমি দেখার পর থেকেই মৎস্যজীবীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, মৎস্যজীবীরা ডিঙি নৌকা এবং ছোট ভুটভুটিতে করে মুড়িগঙ্গা নদীতে মাছ ধরেন। বিশাল আকৃতির এই তিমির হামলার আশঙ্কা করছেন মৎস্যজীবীরা। পুলিশ এবং মৎস্যজীবীদের সহযোগিতায় লঞ্চ এবং স্পিডবোটে করে মুড়িগঙ্গা নদীতে তিমির অবস্থান জানতে খোঁজ চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা বক্কর শেখ বলেন, ‘সকালে বিশাল তিমি মাছটিকে নদীর চরে দেখতে পাওয়ার পর মৎস্যজীবীরা মাছটিকে ঠেলে নদীতে নামিয়ে দেয়। তার পর থেকে আতঙ্কে কেউ আর নদীতে মাছ ধরতে যেতে চাইছে না। তিমিটাকে নদী থেকে দ্রুত সমুদ্রে বের করা না গেলে যে কোনও মুহূর্তে কারও প্রাণ যেতে পারে।’
এ দিন দিনভর তিমিটিকে মাঝে মধ্যেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসতে দেখেন ভেসেলের যাত্রীরাও। যা নিয়ে কাকদ্বীপের লট নম্বর আট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়ার জেটিঘাটে মুড়িগঙ্গা নদীতে পারাপার করা নিত্যযাত্রীদের মধ্যেও আতঙ্ক দানা বেধেছে। সামনেই গঙ্গাসাগর মেলা।
এই পয়েন্ট দিয়েই তীর্থযাত্রীদের বার্জ, ভেসেল এবং লঞ্চে করে পারাপার করা হবে। তার আগেই মুড়িগঙ্গা নদীতে দানবাকৃতির তিমির আনাগোনায় উদ্বিগ্ন জেলা বন দপ্তর থেকে পুলিশ প্রশাসন। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে তিমিটিকে দ্রুত বঙ্গোপসাগরে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।