‘বহু মানুষ বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন’, পরিবহণ মন্ত্রীকে ধমক দিলেন মমতা
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
তাঁর বিরুদ্ধে তেমন কোনও অভিযোগ নেই। বরং তিনি কাজ করেন। এই কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যার জেরে সাধারণ মানুষজনকে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছে। রাস্তায় বেরিয়ে বাংলার মানুষজনকে অসুবিধায় পড়তে হওয়ার কথা নালিশ হিসাবে জমা পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তারপরই যে মন্ত্রী দায়িত্বে আছেন তাঁকে ধমক খেতে হয়। দু’কথা শুনতে হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে। আসলে শহর থেকে জেলায় কোনও মানুষ অসুবিধায় থাকুক তা চান না মুখ্যমন্ত্রী। তাই নবান্ন সভাঘরে ভরা বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী খেলেন জোর ধমক।
আসলে রাস্তায় বেরিয়ে মানুষজন বাস পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তার ফলে অফিস যাতায়াত থেকে নানা কাজে যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম নাকাল হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষকে। আর মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, মন্ত্রী অথবা সচিব রাস্তায় বেরিয়ে দেখেন না, সাধারণ মানুষের কী অসুবিধা হচ্ছে। ‘ট্রান্সপোর্ট দফতর সাইলেন্ট দফতর হয়ে গিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘নীরব’ হয়ে গিয়েছে পরিবহণ দফতর। তাই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। মানুষের হয়রানি বরদাস্ত করা হবে না বলে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে কড়া ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী মানুষের স্বার্থে পরিবহণ মন্ত্রীকে শহর ঘুরে পরিদর্শনের নির্দেশও দেন।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন ও ধমকের মুখে পড়ে বেজায় চাপে পড়েন পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি ভাল কাজ করে থাকেন। তারপরও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি নীরবে কাজ করে যান। তাই বাংলার আপামর জনগণ পরিষেবা সম্পর্কে তেমন জানতে পারেন না। কারণ প্রচারের আলোয় থাকেন না পরিবহণ মন্ত্রী। এই মানুষের সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রী এবং সচিব নিজে কখনও ভিজিট করেছেন? কলকাতা ঘুরে দেখেছেন, কোথায় কোথায় বাস থাকছে না? মানুষ কেন দাঁড়িয়ে থাকে? অফিস ছুটির পর বাসের জন্য কত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন সেটা নিয়ে পরিবহণ দফতর কোনও সমীক্ষা করেছে? কোন কোন এলাকায় বাসের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো যেতে পারে দেখা হয়েছে? আমি নিজে দেখেছি, বহু মানুষ বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। পরিবহণ মন্ত্রী কি নিজে কখনও ভিজিট করেছেন?’
পরিবহণ মন্ত্রী বিষয়টি কিছু উত্তর দেন। তাতে আরও বিপাকে পড়তে হয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নে। পরিবহণ মন্ত্রী মাইক্রোফোন কাছে টেনে নিয়ে বলেন, ‘বাসের ফ্রিকোয়েন্সি কিছু বাড়ানো হয়েছে। তা শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘কিছু বলে কোনও কথা হয় না। তুমি একজন মন্ত্রী। তোমার এটা বোঝা উচিত যে কিছু কথার মানে হয় না। মানুষ যাতে ভালভাবে অফিস যেতে পারেন এবং বাড়ি ফিরতে পারেন তা তোমাকে দেখতে হবে। কাজের দিন শহরের সর্বত্র ভিজিট করতে হবে। শুধু এক জায়গায় নয়, সর্বত্র পরিদর্শন করতে হবে। রাতে শরীর খারাপ হলে, ওষুধের প্রয়োজন হলে, কিনতে যাবে কী করে? সবার তো আর দু’চাকা, চারচাকা নেই। সে থেকেই বা লাভ কী যদি রাস্তা বন্ধ থাকে। তাহলে হাসপাতালে যাবে কি করে? দু’একজন লোকের জন্য গোটা সমাজ ভুগবে সেটা মেনে নেওয়া যায় না।’