• প্রথম দিনেই অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়ে’ ২৫ হাজার রেজিস্ট্রেশন
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, ডায়মন্ড হারবার: ডায়মন্ড হারবারের এসডিও মাঠ। সেবাশ্রয় শিবির। ডাক্তার দেখিয়ে বেরিয়ে বৃদ্ধ নিত্যানন্দ হালদার বললেন, ‘অনেক দিন ধরেই বুকে ব্যথা। পয়সার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছিলাম না। আজ ডাক্তার দেখিয়ে শান্তি পেলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য আমার আশীর্বাদ রইল।’

    বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে বৃহস্পতিবার এই ‘সেবাশ্রয়’ প্রকল্পের সূচনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। প্রথম দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের এই মডেল শিবিরে এসেওছিলেন তিনি। ডাক্তার দেখাতে আসা প্রচুর বৃদ্ধ–বৃদ্ধার সঙ্গে কথাও হয় তাঁর। নিখরচায় ডাক্তার দেখিয়ে বিনামূল্যে ওষুধ পাওয়ায় অনেকেই জড়িয়ে ধরেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে।

    অভিষেক বলেন, ‘এই প্রকল্প এর আগে ভারতে কোথাও কেউ কোনও দিন করেননি। গোটা দেশের কাছে ডায়মন্ড হারবার এখন মডেল। এই লোকসভার সাতটি বিধানসভা এলাকায় ধাপে ধাপে ৭৫ দিনে ৩০০ ক্যাম্প হবে।’ প্রথম দিনের শেষে ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার ৪১টি শিবিরে ২৫ হাজার মানুষ রেজিস্ট্রেশন করান।

    চোখের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন রত্নেশ্বরপুরের মাধবী মণ্ডল। বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়েও চোখের ঝাপসা ভাবটা কাটছিল না। লোক মারফত শুনে আজ এখানে চোখ দেখালাম। চিকিৎসকেরা দীর্ঘক্ষণ চোখ পরীক্ষা করলেন। বিনামূল্যে ওষুধও দিয়েছেন। চশমার পাওয়ারও বদলে দিয়েছেন। হাসপাতালে যদি এটা হতো তা হলে আমাকে এত ভুগতে হতো না।’ চল্লিশের মাধবীকে ছেড়ে পঁয়তাল্লিশের মায়া ভাণ্ডারীর কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘বুকের বাঁ দিকে যন্ত্রণা হচ্ছিল। হাসপাতালে যাব যাব করে যেতে পারিনি। এখানে রেজিস্ট্রেশন করে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। একজন মহিলা চিকিৎসক দেখলেন। বিভিন্ন কথা জানতে চাইলেন। এক্সরে করার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ দিয়েছেন।’

    এ দিন এসডিও মাঠে ‘সেবাশ্রয় মডেল শিবিরের’ উদ্বোধন করেন অভিষেক। ক্যাম্পের বাইরে হাজার হাজার মানুষের ভিড়। কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জাতীয় সড়কও। প্রতিটি মডেল ক্যাম্পে থাকছে তিনটি ডাক্তারের চেম্বার, রেজিস্ট্রেশন বা হেল্প–ডেস্ক, রোগীদের ওয়েটিং রুম, বিনামূল্যে ওষুধের দোকান। থাকছে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন। কার্ডিয়্যাক মনিটর, দু’টি করে ক্রিটিক্যাল ইউনিট বেডের পাশাপাশি ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে। অন্যান্য ক্যাম্পে থাকছেন দু’জন চিকিৎসক, হেল্প–ডেস্ক, ওয়েটিং রুম, বিনামূল্যে ওষুধের দোকান। প্রত্যেক বিধানসভা এলাকায় একটি মডেল ক্যাম্প ছাড়াও থাকবে ৪০–৪৫টি ক্যাম্প।

    এর পরে ফলতা, বিষ্ণুপুর, মেটিয়াবুরুজ, সাতগাছিয়া, বজবজ এবং মহেশতলায় ‘সেবাশ্রয় শিবির’ হবে। প্রেশার, ডায়াবিটিস, ক্যান্সার, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, কিডনির চিকিৎসা পরিষেবা থাকছে। ইসিজি এবং ট্রিপল সেরোলজি টেস্টের ব্যবস্থাও থাকছে। এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি-র টেস্টও হবে। থাকছে নেবুলাইজ়ার, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, সেরোলজি কিট, অ্যাম্বুল্যান্স। রাজ্যের ১২টি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালকে শিবিরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ১৬ থেকে ২০ মার্চ ‘মেগা সেবাশ্রয় শিবির’ হবে রোগীদের ফলোআপের জন্য।

    এ দিন ক্যাম্প থেকে বেরোনোর সময়ে অভিষেক বলেন, ‘আমরা মানুষকে পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। বিশেষ করে আমি ডায়মন্ড হারবারের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ এবং দায়বদ্ধ।’

  • Link to this news (এই সময়)