• আরামবাগ মেডিক্যালে অব্যবস্থায় কর্মীদের ধমক সাংসদের
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সরকার, আরামবাগ

    হাঁটাচলার ক্ষমতা নেই। এক রোগী দীর্ঘক্ষণ অ্যাম্বুল্যান্সে অপেক্ষা করছেন। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু একটা স্ট্রেচার কিংবা হুইলচেয়্যার জোটেনি। আবার কেউ দু’দিন ধরে হাসপাতালে বেড পাননি। ঠান্ডায় আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে কাটাতে হয়েছে তাঁকে।

    আচমকা হাসপাতালে এসে এমন বেশ কিছু দৃশ্য অনেকক্ষণ ধরে দেখেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগ। এর পরেই হাসপাতালের কর্মীদের বকুনি দেন মিতালি। শেষে নিজে একটি হুইল চেয়্যারের ব্যবস্থা করে ওই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন সাংসদ।

    বৃহস্পতিবার বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন রোগীর পরিবারের লোকজন। সে সময়ে মিতালি ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। খবর পেয়ে সাংসদ তড়িঘড়ি হাসপাতালে যান। কিন্তু সেই খবর ছিল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। নিজের চোখে রোগীদের সমস্যা দেখে সাংসদ ধমক দেন হাসপাতালের কর্মীদের।

    এ দিন খানাকুল থেকে এসেছিলেন এক মহিলা। তাঁর হাঁটার মতো অবস্থা ছিল না। প্রায় আধ ঘণ্টা ওই মহিলাকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখেন মিতালি। তিনি তিতিবিরক্ত হয়ে হাসপাতালের কর্মীদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেন এই অবস্থা?’ হাসপাতালের চূড়ান্ত অব্যবস্থার কথা সাংসদ নিজেও স্বীকার করে নেন। তাঁর প্রশ্ন, কেন স্ট্রেচারের জন্য রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। কেন হুইল চেয়ার নেই।

    মিতালি বলেন, ‘আমি শুনেছি অনেক বিষয়ে খামতি আছে। রোগীদের সঙ্গে অনেক সময় দুর্ব্যবহার করা হয়। আমি সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। ধীরে ধীরে সব কিছু খতিয়ে দেখব। কিন্তু আর যেন না শুনতে হয় যে রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন না।’ তাঁর বক্তব্য, হাসপাতালে কর্মীর সংখ্যা কম নয়। কেন তা হলে মানুষ পরিষেবা পাবেন না?

    সাংসদের কথা শুনে আশ্বস্ত হন রোগীর আত্মীয়–স্বজনরা। তবে হাসপাতালে সাংসদের ধমক দেখতে অনেকেই জড়ো হয়ে যান। শোরগোল পড়ে যায়। মেঝেতে পড়ে থাকা রোগীর জন্য বেডের ব্যবস্থা করতে বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। রোগী চিকিৎসায় যেন কোনও অবহেলা না হয়, সেই নির্দেশ দেন সাংসদ। এক রোগীর আত্মীয় শেখ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘এই হাসপাতালটি মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু পরিষেবা মেলে না। একটা জিনিস ভালো লাগল এখানকার সাংসদ মিতালি বাগ তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিলেন। সাংসদের এই ভূমিকায় আমরা খুশি।’

    মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায় বলেন, ‘আমি শুনেছি। সাংসদ এসেছিলেন। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। পরিষেবা দিতে যদি কোনও কর্মী কর্তব্যে গাফিলতি করেন, তা হলে তার বিরুদ্ধে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)