• ৩ কোটির পাঠ্যবই চুরি, তদন্তে বিস্মিত হাইকোর্ট
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের সরকারি গোডাউন থেকে বছর দুয়েক আগে স্কুলের দু’লক্ষ পাঠ্যবই (মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা) চুরির অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় পুলিশি তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য — এ তো সাইকেলে করে কয়েকটা বই নিয়ে চলে যাওয়া নয়, রীতিমতো লরি করে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা!

    সেখানে মাত্র দু’জন অভিযুক্ত হতেই পারে না। এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। আদালতের বক্তব্য, শুধু অভিযোগ হলো আর পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়ে দিল, ব্যাপারটা ঠিক এ রকম নয়।

    বই চুরির ঘটনায় জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট তলব করে হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য — দু’বছর আগে এই বই চুরি হয়। তা হলে পড়ুয়াদের বিকল্প বই দেওয়া হলো কী ভাবে? এ পর্যন্ত কত বই দেওয়া হয়েছে? আদতে কত বই উদ্ধার করা গিয়েছে? যাবতীয় তথ্য–সহ রিপোর্ট দিতে হবে জেলা পরিদর্শককে। পাশাপাশি, পুলিশের থেকেও ফের রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।

    এ দিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য — এটা নিছক কোনও চুরি নয়। বিষয়টিকে সে ভাবেই দেখতে হবে পুলিশকে। দু’জন অভিযুক্ত কী ভাবে জামিন পেয়ে গেলেন, কেন মূল অভিযুক্তরা ধরা পড়ল না — আগামী শুনানিতে এ সব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে পুলিশকে।

    মামলাকারী গ্রামবাসীদের তরফে আইনজীবী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ২০২২ সালে ইসলামপুর স্কুল এসআই (পরিদর্শক)–এর অফিস থেকে ২ লক্ষ পাঠ্যবই চুরির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। দু’জনকে ধরা হলেও পরে তাঁরা জামিন পেয়ে যান। গত বছর নভেম্বরে পুলিশ চার্জশিট জমা দেয়। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ মূল অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। মামলাকারীরা সিবিআই–তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্যের বক্তব্য, প্রায় ৩০ হাজার বই উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি বইয়ের জন্য তদন্ত চলছে।

    প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন — দু’লক্ষ বই কী ভাবে একটি অফিস থেকে চুরি হয়ে গেল? তাঁর বক্তব্য — অভিযুক্তরা যদি ধরাই পড়েন, তা হলে এখনও কেন বই উদ্ধার করা গেল না? দু’বছরেও বই উদ্ধার হল না! আর কত সময় লাগবে?

    আদালত জানায়, যেহেতু চার্জশিট পেশ হয়েছে, তাই এখন হাইকোর্ট পদক্ষেপ করলে বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়বে। এ কারণেই আদালত তদন্ত নিয়ে আপাতত কিছু বলবে না। এর পরেই আদালত ডিআই–এর রিপোর্ট তলব করে।

  • Link to this news (এই সময়)