আরজি কর-প্রতিবাদী শিল্পীদের 'বয়কট' নিয়ে অভিষেক বনাম কুণাল! পক্ষে কল্যাণও
আজ তক | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
আরজি কর-প্রতিবাদীদের 'বয়কট' নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই আড়াআড়ি বিভাজন! দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলছেন, তিনি শিল্পীর স্বাধীনতার পক্ষে। উল্টোদিকে, বয়কটের দাবিতে অনড় রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি আবার পাশে পেয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আরজি কর-কাণ্ডের সময় যে সময় শিল্পীরা রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় নেমেছিলেন, তাঁদের তৃণমূলের কোনও অনুষ্ঠানে ডাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে,'আরজি কর-কাণ্ডে যে যে তারকা কুৎসিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন, তাঁদের বয়কট করুন'। এক্স হ্যান্ডেলেও নিজের মত তুলে ধরেন।
তবে কুণালের সঙ্গে সহমত নন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়,'যেমন একজনের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের স্বাধীনতা আছে, কেউ একটা অনুষ্ঠানে কাউকে আনতে চাইলেও তাঁর স্বাধীনতা আছে। দলের তরফে কেউ নির্দেশ দেননি। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়েও এই বিষয়ে কোনও কথা হয়নি। কোথাও কোনও বিজ্ঞপ্তি দেখেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বলেছেন? আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বলেছি? কেউ ব্যক্তিগতভাবে বলতেই পারে'।
তিনি যোগ করেন,'আমরা সবার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। ১৪ অগাস্ট যাঁরা রাত দখলের ডাক দিয়েছিলেন, কেউ সমর্থন করুন না করুন, আমি তাঁদের সমর্থন জানিয়েছিলাম। এটাই বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ফারাক'।
অভিষেকের এহেন মন্তব্য সত্ত্বেও নিজের অবস্থান বদল করেননি কুণাল। তাঁর ব্যাখ্যা,'কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আমি কোনও প্রতিবাদীকে বয়কটের কথা বলিনি। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন, যাঁরা তৃণমূল কর্মীদের চটিচাটা বলেছিলেন, যাঁরা বাংলাদেশ মডেলে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যছাড়া করার কথা বলেছিলেন, আমি তাঁদের বয়কটের কথা বলেছি। আমি গতকাল যা বলেছি, আজও তাই বলছি, আগামিকালও তাই-ই বলব'।
কুণালের মন্তব্যকে 'ব্যক্তিগত মত' বলে উল্লেখ করেছেন অভিষেক। তার প্রেক্ষিতে কুণাল বলেন,'সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের ভাবাবেগের জায়গা থেকে আমি যা বলেছি, ঠিক বলেছি। দলের সর্বময় নেত্রী মমতাদি। তিনি যদি বলেন, আমি ভুল বলেছি, তা হলে আমি মেনে নেব'।
এই গোটা বিতর্কে কুণালের পাশে দাঁড়িয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বয়কটের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাঁরা ব্যক্তিগত কুৎসা করেছেন তাঁদের সমর্থন কোনওভাবেই নয়। যে সব শিল্পীরা 'চটিচাটা' বা 'চটি মারো তালে তালে'র মতো মন্তব্য করেছিলেন, তাঁদের দলীয় অনুষ্ঠানে কেন ডাকা হবে? আর তাঁরাই বা কেমন, তাঁদেরই বা শিরদাঁড়া কোথায়?'