মহানগরীর ৮টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে, কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে কলকাতা পুরসভা পৃথক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আর অ্যাপ তৈরির কাজ শেষের পথে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বারবার বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। এবার বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। শহরের ৮টি বেআইনি নির্মাণ অবিলম্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর তাতেই শহরে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আজ, শুক্রবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। অবিলম্বে ওই বেআইনি নির্মাণগুলিতে বিদ্যুৎ এবং জল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। আর সেখানে যাঁরা বসবাস করেন তাঁদেরও উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ এবং সিইএসসিকে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
শহরে বেশ কিছু এনিমি প্রপার্টি রয়েছে। তার সঙ্গে বেআইনি নির্মাণও আছে। এসব নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলার শুনানিতে কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের ৬টি, রাজা রাজনারায়ণ স্ট্রিটের ১টি, গিরিশ বিদ্যারত্ন লেনের ১টি সম্পত্তির কথা উল্লেখ রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশ একটি টাস্কফোর্স গঠন করে। ওই টাস্কফোর্স কতগুলি বেআইনি নির্মাণ আছে সেটা খতিয়ে দেখে থাকে। কতজন বাসিন্দা সেখানে আছেন সেটাও খতিয়ে দেখে টাস্কফোর্সের সদস্যরা। কলকাতা পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই ওই সব নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজকের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবিলম্বে ওই ৮টি বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে হবে। পানীয় জলের পরিষেবা এবং সিইএসসি’র বিদ্যুৎ পরিষেবা দ্রুত বন্ধ করে দিতে হবে। উচ্ছেদের সময় কোনও সমস্যা হলে কলকাতা পুলিশ তাদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করবে। উচ্ছেদের পর ওই সম্পত্তি অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ উপযুক্তভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা সেটা কলকাতা পুরসভা, পুলিশ এবং সিইএসসি নজরদারি করবে বলেও নির্দেশে বলা হয়েছে।
শহরে বেআইনি নির্মাণ বেড়ে যাচ্ছে বলে টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে নানা অভিযোগ প্রায়ই শুনেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ডিজি বিল্ডিংকে এই নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেন তিনি। এবার কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ বাস্তবায়িত হল কিনা, সেটা নিয়ে রিপোর্ট আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে জমা দিতে হবে। তবে ইতিমধ্যেই ১৭০ নম্বর কেশবচন্দ্র স্ট্রিটের এক বাসিন্দা বেগতিক পরিস্থিতি দেখে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সর্বোচ্চ আদালত সম্পত্তির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে। তাই এই সম্পত্তি ভাঙা হবে কিনা সেটা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উপর নির্ভর করবে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওই সব বাড়িতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করবে কলকাতা পুরসভা। উচ্ছেদ সম্পূর্ণ হলে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করতে হবে।