• মেয়েকে কর্মস্থলে পৌঁছতে গিয়ে ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট বাবা, অগ্নিসংযোগ বিক্ষুব্ধ জনতার
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৫
  • নার্সিং স্টাফ মেয়েকে মোটরবাইকে চাপিয়ে কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন বাবা। সেই সময় দ্রুত গতিতে আসা ডাম্পার ধাক্কা মারে মোটরবাইককে। ডাম্পারের চাকার নিচে পিষে যান বাবা। গুরুতর আহত মেয়েও। রায়গঞ্জে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় মৃত সুভাষ দে সরকার (৬৫)। মেয়ে সুস্মিতা দে সরকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডাম্পারটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত জনতা।

    জানা গিয়েছে, নিহত সুভাষ দে সরকারের বড় মেয়ে সুস্মিতা দে সরকার রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্সিং স্টাফ। ছেলে শুভজিৎ দে সরকার রায়গঞ্জ জেলা আদালতের উকিল। ছোট মেয়ে স্বর্ণালি দে সরকার আইন নিয়ে কোচবিহারে পড়াশোনা করেন। মাঝেমধ্যেই বড় মেয়েকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে রায়গঞ্জের উদয়পুর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী সুভাষ দে সরকার। শুক্রবারও মেয়েকে বাইকে নিয়ে উকিলপাড়ায় মেয়ের কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।

    রায়গঞ্জের শিল্পীনগর এলাকা সংলগ্ন পুরোনো ৩৪ নং জাতীয় সড়কের উপর বাইকটিকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে দ্রুত গতিতে আসা ডাম্পার। দুর্ঘটনার পর সুস্মিতা দে সরকার রাস্তার ধারে পড়লেও ডাম্পারের চাকার নিচে পিষ্ট হন সুভাষ দে সরকার। তাঁকে কিছুদূর হ্যাঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে টেনে নিয়ে যায় ডাম্পারটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। সুস্মিতাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    ঘটনার পরেই উত্তেজিত জনতা ডাম্পারের চালককে মারধর শুরু করে। রাস্তার উপরেই ঘাতক ডাম্পারটিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় রায়গঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর কাজ করে। ডাম্পারের চালক পালিয়ে গেলেও ডাম্পারটিকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

    স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের নবনির্মিত বাইপাস চালু হয়ে যাওয়ার পরেও পুরোনো এই জাতীয় সড়কে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। বিশেষ করে ডাম্পারে করে মাটি নিয়ে যাওয়া হয় এই রাস্তা দিয়ে। নম্বরপ্লেট ছাড়া অবৈধ কিছু ডাম্পারও চলাচল করে বলে অভিযোগ। বেপরোয়া যান চলাচলের জন্য আতঙ্কে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসন দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করুক, দাবি স্থানীয়দের।

    রায়গঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দ্রুত গতিতে একটি গাড়ি যাওয়ার সময় বাইকে ধাক্কা মারলে একজন গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যান। তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা ও পুলিশ ওই ব্যাক্তিকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি।’ তিনি আরও জানান, শীঘ্রই ওই রাস্তায় একটি ট্রাফিক-কিয়স্কের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই এলাকায় স্পিড ব্রেকার বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।

  • Link to this news (এই সময়)