শিলিগুড়িতে মা-ছেলের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এখনও ধোঁয়াশা কাটল না। মৃতদের রক্তের নমুনা এবং ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলো জলপাইগুড়ির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে। ময়নাতদন্তের পরে শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই নমুনা জলপাইগুড়ি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে উত্তরায়ণ ফাঁড়ির পুলিশ জলপাইগুড়ি ফরেন্সিক ল্যাবে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য আবেদন জানিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, দম বন্ধ হওয়ার জন্যই মৃত্যু হয়েছে মা ও ছেলের। অন্য দিকে, অসুস্থ মেয়ে তেজল দাসের ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে বলেও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
তেজলের ফুসফুসে কার্বন মনোক্সাইডও পাওয়া গিয়েছে। তবে তার শারীরিক পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো বলে নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে। তেজলের বাবা সুজিত দাসও সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার বিশ্বচাঁদ ঠাকুরের বক্তব্য, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এবং পারিপার্শ্বিক ছবি দেখে কোনও অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি। আমরা তদন্ত করছি।’
বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ি মাটিগাড়ার উত্তরায়ণ উপনগরীতে একটি বাংলোয় ঘরের ভিতর থেকে মা ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে উত্তরায়ন ফাঁড়ির পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ঘরের ভেতর থেকে একটি কাঠ কয়লার উনুন উদ্ধার করেছে। ঘরের আশেপাশে প্রচুর মদের বোতলও উদ্ধার হয়। কী ভাবে এই ঘটনা তা পরিষ্কার নয় এখনও।
ঘটনায় মৃত তিথি দাসের ভাগ্নে তন্ময় সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তিথির ৮ বছরের ছেলে তেজসেরও মৃত্যু হয়েছে এই ঘটনায়। তন্ময়কে জিজ্ঞাসাবাদে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বর্ষবরণের রাতে খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল ঘরে। সেই সময়ে মদ্যপানও করেছিলেন তাঁরা। তিথি তার ছেলে তেজস এবং মেয়ে তেজল তিনজন একই ঘরে ছিল। শোয়ার আগে ঘর গরম করার জন্য কয়লার উনুন জ্বালিয়ে ঘরে রাখা হয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ঠান্ডায় ঘরের জানালা দরজা বন্ধ রেখে কয়লার উনুন জ্বালানো ছিল ঘর গরম করার জন্য। তা থেকে কোনও ভাবে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে ঘরের ভিতর। তার জেরেই শাসকষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় মা ও ছেলের। অসুস্থ হয়ে সংজ্ঞাহীন হন মেয়ে।