২০২৬-এ ভোটে আড়াইশো আসন জিতে ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল, দাবি কুণালের
বর্তমান | ০৪ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আড়াইশো সিট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আবার সরকার গঠন করবে। একইসঙ্গে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আমাদের অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কেশপুরের ছুতারগেড়্যা এলাকার কারবালা ময়দানে ধিক্কার সমাবেশে একথা বলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ধিক্কার সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শিউলি সাহা, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রফিক, কেশপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি প্রদ্যৎ পাঁজা সহ দলীয় নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেশপুর হাই স্কুলের মাঠে সভা করতে এসেছিলেন। সেই সময়ে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের উপর আক্রমণ চালায় সিপিএম। নেত্রীর পায়ে আঘাত লাগে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই এদিনের জনসভা। কুণালবাবু বলেন, মানুষকে বলে দিন আবার আসছে তৃণমূল। সিপিএমের অত্যাচার রফিকদা জানেন। বর্তমানে সাধারণ মানুষ ৭০টার বেশি প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন। আপনাদের অধিকার রক্ষা করবে একটাই দল— তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএমকে হারিয়েছে, বিজেপিকে হারিয়েছে, আগামী দিন ভারতবর্ষ দখল করবে। কেশপুরের মানুষের লড়াইকে সারা বাংলার মানুষ কুর্নিশ করে। বিজেপি হিন্দু মুসলমান বলে ভাগ করছে। যা বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।
প্রসঙ্গত, একসময় কেশপুর ছিল সিপিএমের গড়। লালপার্টির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল কেশপুরের মানুষ। রাজনৈতিক হানাহানি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তবে ২০০০ সাল থেকে কেশপুরের মাটিতে তৃণমূলের উত্থান শুরু হয়। সিপিএম নেতাদের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা লড়াই শুরু করেন। তৃণমূলের উত্থানের অন্যতম কারিগর ছিলেন মহম্মদ রফিক। জানা গিয়েছে, ২০০১ সালের ৩ জানুয়ারি কেশপুর অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে তিনি রেলমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ ভিড় করেন কেশপুরে। জনসভা শেষে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বাড়ি ফেরার পথে তাঁদের উপর চড়াও হয় হার্মাদ বাহিনী। জখম হন কয়েকশো তৃণমূল কর্মী। গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি মহিলাদের কানের দুল, গয়না লুট করা হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ব্যাপক মারধর করা হয়। তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। সেই সময় তাঁর সঙ্গী ছিলেন মহম্মদ রফিক। এদিন রফিক বলেন, সেই স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি। দিদির সঙ্গে ছিলাম আমি। পাথর দিয়ে মেরেছিল হার্মাদরা। মহিলাদের উপর অত্যাচার আজও ভোলার নয়। কেশপুরের মানুষ সিপিএমকে কোনও দিন ক্ষমা করবে না। এটা কেশপুরের মানুষের কাছে ধিক্কার দিবস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালের পর থেকে কেশপুরের মাটিতে সিপিএমের অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হলেও কেশপুরের রাজনৈতিক রং বদলায়নি। কেশপুর থেকে সিপিএম জিতেছিল। ২০১৬ সালে কেশপুর বিধানসভায় জেতে তৃণমূল। এরপর কেশপুরের মাটিতে সিপিএম আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। কেশপুরের বাসিন্দা শ্যামলকুমার মণ্ডল বলেন, রোজ রাজনৈতিক অশান্তি হতো। বিরোধীরা সংগঠন করতে পারত না। আজ দিন বদলেছে।-নিজস্ব চিত্র