নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: শীত পড়তেই খেজুরের গুড় বিক্রির পরিমাণ বাড়ল। কনকনে ঠান্ডায় জঙ্গলমহলজুড়ে খেজুরের গুড় যেন হটকেক। আর এতেই মুখে হাসি ফুটল গুড় ব্যবসায়ী ও কারিগরদের মুখে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই। ভিনজেলা থেকেও মানুষ গুড় কিনছেন। একইসঙ্গে ভিনরাজ্যেও পাঠানো হচ্ছে গুড়। গুড় ব্যবসায়ীদের কথায়, ঠান্ডা বাড়ায় গুড়ের মান ভালো হয়েছে। প্রতিদিন ভালো পরিমাণে গুড় তৈরি হচ্ছে। শালবনী এলাকার গুড় বিক্রিতা নজিবুল মণ্ডল বলেন, পাইকারি বাজারে গুড়ের চাহিদা রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে মানুষ খাঁটি গুড় কিনে নিয়ে যায়। বিভিন্ন মিষ্টির দোকানের ব্যবসায়ীরাও গুড় কিনছেন। এতে বেশ ভালোই উপার্জন হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর জেলায় বনাঞ্চলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে খেজুরের গাছ রয়েছে। স্থানীয়রা কঠোর পরিশ্রম করে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। একইসঙ্গে মুর্শিদাবাদ, দুই ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, নদীয়া সহ নানা জেলা থেকেও খেজুরগুড় তৈরির কারিগররা আসেন। তিন-চার মাসে তাঁরা মোটা টাকা আয় করেন বলেও জানিয়েছেন। এই জেলার শালবনী, চন্দ্রকোণা রোড সহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় অস্থায়ী ঝুপড়ি বানিয়ে তাঁরা থাকেন। অক্টোবর মাসের শুরুতেই কারিগররা চলে আসেন। প্রতি কারিগর কমবেশি ১০০টি খেজুর গাছের পাতা সাফ করে রস সংগ্রহের উপযুক্ত করেন। তাঁরা দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি করে গুড় তৈরি করে থাকেন। গুড় প্রতি কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একইসঙ্গে খেজুরের রস বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা প্রতি গ্লাস। শীত জাঁকিয়ে পড়লে রসের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। তখন গুড় তৈরিও বেশি হয়। কিন্তু দিন কয়েক ধরে জাঁকিয়ে শীত পড়ায় খেজুরের রসের পরিমাণও বাড়ছে। তাই ব্যবসায়ীরা খুশি। এদিন শালবনীতে জাতীয় সড়কের পাশে গুড় কিনতে আসেন মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা উৎপল সেন। তিনি বলেন, জঙ্গলমহলের গুড়ের ভালো চাহিদা রয়েছে। প্রায় তিন কেজি গুড় কিনে নিয়ে গেলাম। গুড়ের মান ভালোই।